রুহুল আমিন, ডিমলা(নীলফামারী)

নীলফামারীর ডিমলায় বিসিএস ক্যাডার পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে আটক করে পুলিশ। আটক প্রতারক উপজেলার ছাতনাই বালাপাড়া শোভান গঞ্জ গ্রামের ছেলে মো.রবিউল ইসলাম(২৯)।

রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে উপজেলার মসজিদ মার্কেটের সামনে রায় ফার্নিচার দোকান থেকে আটক করা হয়।

তিনি নিজেকে ৪৩তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের ৪৪তম মেধাস্থান অধিকারী হিসেবে পরিচয় দেন ও ডিমলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ’র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বলে পরিচয় দিতেন।

জানা যায়, রবিউল ইসলাম ৪৩তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের ৪৪তম মেধাস্থান অধিকারী হিসেবে পরিচয় দেন ৷ তার কথাবার্তায় সন্দেহ লাগলে তার ৪৩তম বিসিএসের ফলাফলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ক্যাডারের ৪৪তম মেধাস্থান অধিকারীর রোল নম্বরটা দেখে তাকে সদ্য ৪৩ তম বিসিএস’র নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত কাঞ্জিলাল রায় জীবন প্রশ্ন করে ভাই, আপনার মেরিট পজিশন কত?কিছুক্ষণ থেমে উত্তর দেয় ‘৪৪তম’ । ভাই, আপনি যেন কার বোর্ডে ভাইভা দিছিলেন?৬ নং বোর্ড এই কথা শুনেই তার বাটপারি নিশ্চিত হয়ে যায় মোটামুটি । কারণ এভাবে কেউই বলে না।ভাই কার বোর্ড ?সাইফুল ইসলাম ! ( পিএসসি’তে বর্তমানে এই নামে কোন বিজ্ঞ সদস্য নেই ৷ শেষ প্রশ্নটি ভাই আপনি লিখিত কই দিছিলেন? রংপুরেই দিছিভাই।

এভাবেই সে ধরা খায় । কারণ পিএসসি’র বর্তমান কোন বিজ্ঞ সদস্যের নাম সাইফুল ইসলাম নয় । দ্বিতীয়ত, ৪৩তম বিসিএসের ৪৪তম পজিশন যিনি লাভ করেছেন তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ১১০ দিয়ে শুরু । এর মানে তিনি ঢাকা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ছিলেন।তার বাটপারি নিশ্চিত হলে ডিমলা থানা পুলিশের ওসিকে জানান পরে এ এস আই মোস্তাফিজুর রহমান কে ঘটনাস্থলে পাঠান।

এ বিষয়ে দোকানদার অনুকূল রায় বলেন,আমার দোকানে জিনিস ক্রয় করতে আসলে জিনিসের দরদাম চলছে।এক পর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার বাসা কোথায়? সে বললো ডাঙার হাট। আপনি কী করেন?সে বললো ডিমলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ’র শিক্ষক। সে আবার বললেন সে এবার ৪৩ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে টিকছেন।পরে আমি বললাম আমার ভাগিনা ও ৪৩ তম বিসিএস এ নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন।সে আমার দোকানের ভিতরে ছিল চা খেতে খেতে আমার ভাগিনার সাথে পরিচয় করে দিলে রবিউল ইসলাম কে প্রশ্ন করলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নাই।সন্দেহ জাগলে পরে থানায় ফোন করলে পুলিশের এ এসআই মোস্তাফিজুর রহমান এসে তাকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে বিদায় দেয়।

এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, সেখানে আমি জিনিস পত্র ক্রয় করতে যাই, সেখানে দোকানদারের সাথে দাম দর না বনলে আমাকে এভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। পরে ডিমলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল স্যার জয়নাল আবেদীন কে বলি ওনি এসে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন।আমি কোন পরিচয় দেই নাই তাদের।তারা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন,বর্তমান সরকার’র মিশন অ্যান্ড ভিষণ কারিগরি শিক্ষায় দেশকে এগিয়ে নেওয়া এবং স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তর করা। প্রতারক রবিউল ইসলাম একটি সরকারি কারিগরি স্কুলের অতিথি শিক্ষক সে নিজেকে ভুয়া বিসিএস পুলিশ ক্যাডার বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতে আসে। এই যদি হয় কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার কী অবস্থা?বর্তমান সরকার’র মিশন এবং ভিষণ কারিগরি শিক্ষায় স্মার্ট বাংলাদেশ রুপান্তর করা কতটুকু তাহা সম্ভব হবে?এভাবে যারা প্রকৃত শিক্ষক তারা বিভ্রান্তিতে পড়বে।আমরা চাই এরকম ভুয়া পক্সি শিক্ষক যেন সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে জায়গা না পায়।

ডিমলা থানার এ এস আই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,সে ক্রেতা সোফা ক্রয় করতে গেছেন সেখানে কাঞ্জিলাল রায় জীবন নামে একজন ৪৩ তম বিসিএস এ নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত ছিল দুজনের গল্পের এক পর্যায়ে রবিউল ইসলাম বলেন আমি ও ৪৩ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে। তাকে কাঞ্জিলাল রায় জীবন বিভিন্ন প্রশ্ন করলে সে উত্তর দিতে পারেন নাই,তাদের সন্দেহ জাগলে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।পরে থানায় ওসি স্যার কে তারা ফোন দেয় পরে আমি গেলে আমাকে বলেন আমি টিকছি এ কথা আমি বলি নাই।পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে ডিমলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ’র পক্সি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। পরে উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এসে তাকে নিয়ে গেছেন।থানায় কোন মুচলেকা নিছেন নাকী প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এরকম কোন ঘঠনা ঘটেনি।তাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হোইছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version