মো: আরিফুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁয় কামাল আহমেদ (৫২) নামের বিএনপির এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার (১৯ নভেম্বর)সকালে কামালের ছেলে নবাব আলী বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হত্যার ঘটনার ৩৬ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও একজন হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল পৌনে নয়টার সময় নওগাঁ-সান্তাহার সড়কের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় কামাল আহমেদকে পরিবহনকারী অটোরিকশার গতি রোধ করে হেলমেট ও মাস্ক পরে ছয় থেকে সাতজন হামলাকারী তিনটা মোটরসাইকেলে করে এসে কামাল আহমেদের ওপর হামলা চালান।

সে সময় একই অটোরিকশায় ছিলেন তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী ও পৌরসভার চকরামপুর এলাকার বাসিন্দা রিমন মোল্লা।

তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে আমি ও কামাল একসঙ্গে সান্তাহার রেলস্টেশন এলাকায় যান। সান্তাহারে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা শেষে রাত ৯টার দিকে তাঁরা বাড়ির উদ্দেশ্যে অটোরিকশায় চড়ে রওনা দেন। আসার পথে সান্তাহার-নওগাঁ সড়কের ইয়াদ আলীর মোড় পৌঁছালে তিনটি মোটরসাইকেল রাস্তার ওপর আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁদের অটোরিকশার গতিরোধ করে হেলমেট ও মুখে কাপড় বাধা ছয়-সাতজন লোক। অটোরিকশাটির পেছনে অন্য দুইজন যাত্রীর সঙ্গে কামাল বসেছিলেন। আর তিনি বসেছিলেন অটোরিকশার সামনে চালকের পাশের আসনে। হামলাকারীরা কামালকে অটোরিকশা দিয়ে নামিয়ে অতির্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তখন তিনি, গাড়ির চালক ও অন্য দুই যাত্রীর প্রাণভয়ে থেকে দৌঁড়ে রাস্তার পাশের একটি গলিতে ঢুকে পড়েন।

কিছুক্ষণ পর এসে দেখেন কামাল রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপর পড়ে আছেন। ততক্ষণে আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে যায়। মুখে হেলমেট ও কাপড় বাধা থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি তাঁরা।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, হামলার সময় ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে থাকা একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারীরা ছয়-সাতজন ছিলেন। তবে হেলমেট ও মুখে কাপড় বাধা থাকার কারনে কাউকে চিনতে পারা যাচ্ছে না। তবে প্রত্যক্ষদর্শী, পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে, ইতোমধ্যে এই হত্যার কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। আশা করছি, খুব শিঘ্রই হত্যাকারীদের শনাক্ত
করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এদিকে সকালে কামাল আহমেদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে শোকের মাতম চলছে। সকাল থেকেই তাঁর জানাজায় অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বজনেরা এসে ভিড় করেন। নিহত বিএনপি নেতার স্বজনদের খোঁজ নিতে ছুটে আসেন নওগাঁ পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা নজমুল হক। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ বাসভবনের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version