তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: মানুষের কয়েকটি অনুভূতির মধ্যে ভালোবাসা একটি প্রধান ও অন্যতম অনুভূতি।

কিন্তু এই ভালোবাসা শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। কখনও কখনও তা অনাবিল হয়ে ধরা দেয় ভিন্ন কোন প্রাণীর সাথে । মানুষের সাথে পাখির এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পার্বতীপুর গ্রামে। ঐ গ্রামের বাস চালক মোঃ সাফি ইসলাম সন্তানের মতো ভালোবাসা দিয়ে পালন করছে দেশি জাতের একটি টিয়া পাখি । অসুস্থ্য টিয়া পাখিটিকে সুস্থ্য করে পোষ মানিয়ে কথা বলা শিখিয়েছেন তিনি ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাফির ঘাড়ে বসে তার সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে উঠেছে টিয়া পাখিটি। মাঝে মাঝে ছোট বাচ্চাদের মতো মুখে চুমু দিচ্ছে। এ যেন অদ্ভুত ভালোবাসার বন্ধন।

ভালোবেসে তার নাম দেওয়া হয়েছে মিঠু । পাখিটি গাছ থেকে ও গাছে উড়ে যাচ্ছে, আবার মিঠু নামে ডাকা মাত্রই উড়ে চলে আসছে। কখনো তার ঘাড়ে, কখনো তার মাথায় আবার কখনো হাতে সময় কাটাচ্ছে। পাখির সঙ্গে শাফির এমন ভালোবাসা দেখে অবাক সবাই।

জানা যায়, পেশায় বাস চালক মোঃ সাফি ইসলাম গত ছয় মাস আগে অসুস্থ অবস্থায় টিয়া পাখিটি এক পরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে মাত্র ৫০০ টাকায় কিনে নেয় । এরপর দীর্ঘ এক মাসের সেবায় পাখিটি ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠলে তাকে পোষ মানাতে সক্ষম হয় সাফি । বর্তমানে সাফি ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই মিলে মিশে থাকছে টিয়া পাখিটি ।

সাফি ইসলাম বলেন, পাখিটি এখন আমার পরিবারের সদস্য । আমি বাজারে এলেও পাখিটি আমার সাথে কাঁধে চেপে আসে । বিষয়টি খুবই আনন্দের । আমার পরিবারের অন্য সদস্যরাও তার যত্ন নেয় ।তিনি আরও বলেন,আমার জানা মতে দেশের আইনে বন্যপ্রাণী পোষা বেআইনি। এখন এই পাখিদের মায়াই পড়ে গেছি।

মাসুদ মিয়া নামে সাফির এক প্রতিবেশী বলেন ,এমন ঘটনা সত্যিই বিরল। আমাদের এখানে এই প্রথম দেখলাম। অবাক করা ঘটনা। অবলা জীব পাখি কীভাবে সন্তানের মতো ভালোবাসছে মানুষকে। এই হানাহানির যুগে এমন ভালোবাসা দৃষ্টান্ত। ওদের দেখে আমারও এমন পাখি পালন করতে ইচ্ছে করে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version