কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আন্তঃনগর এগারোসিন্ধুর এক্সপ্রেস ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামতের পর স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে দুর্ঘটনার পরপর শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। এতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি, পুলিশ, র্যাবসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা। সহযোগিতা করে স্থানীয় জনতা। টানা উদ্ধার অভিযান শেষ হয় মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম উদ্ধার অভিযান সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, দুর্ঘটনায় উল্টে যাওয়া এগারসিন্ধুর ট্রেনের তিনটি বগি লাইন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপরই উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। ফলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনার সাত ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে অতিক্রম করেছে। এর আগে বিকেলে ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভৈরবে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজনকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বরখাস্ত করা তিনজন হলেন- যাত্রীবাহী ট্রেনের পেছন দিকে ধাক্কা দেওয়া মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ড।
রেলওয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ-উদ-দৌলা খান জানান, ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলওয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ আলাদাভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব জংশনের কাছাকাছি গাইনাহাটি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এ কথা জানান।