দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৪৬২ জন। গত বছরের জুনে ছিল ৪ হাজার ৯০৬ জন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৬৮ জনে। একই সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানে আমানতের পরিমাণও বেড়েছে। বুধবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এতে দেখা যায়, গত বছরের জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুনে এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে ২ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার ৫.৮১ শতাংশ। দেশে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৫। এর মধ্যে ৩টি সরকারি খাতের।

এর আগে মঙ্গলবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ব্যাংকগুলোতেও গত এক বছরের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে সাড়ে তিন হাজার। একই সঙ্গে তাদের আমানতের পরিমাণও বেড়েছে। ব্যাংকের মতো নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কোটিপতির সংখ্যা বাড়ল।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছরের জুনে এসব প্রতিষ্ঠানে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আমানত বেড়েছে ২ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। এদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ও লিজের পরিমাণও বেড়েছে।

এর আগে গত মার্চ পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত প্রবাহ ছিল নিুমুখী। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা কমে দাঁড়িয়েছিল ৪১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। এরপর থেকে আমানত প্রবাহ বাড়তে থাকে। গত বছরের জুনে ১৫০ কোটি টাকার বেশি কোটিপতির সংখ্যা ছিল ২ জন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ জনে। ১০০ কোটি টাকার বেশি থেকে ১৫০ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৩ জন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ জনে। এক কোটি টাকার বেশি আমানতকারী ছিল ৪ হাজার ২০৫ জন। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২২০ জনে। ৫০ কোটি টাকার বেশি থেকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী ছিল ১৮ জন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। কোটিপতি আমানতকারীদের মধ্যে ব্যক্তির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ছোট আমানতকারীরা তাদের সঞ্চিত অর্থ তুলে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করলেও বড় আমানতকারীদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি তাদের আমানতের পরিমাণও বাড়ছে।

এর আগে কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের জালিয়াতির কারণে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়। তখন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের জমা টাকা ফেরত দিতে পারছিল না। যে কারণে গ্রাহকদের মধ্যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়। এতে সার্বিকভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের পরিমাণ কমতে থাকে। এখন অবশ্য আমানতের পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version