মোঃ নাজমুল হোসেন বিজয়।
বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ

মাদক বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় রাহাত ফরাজী (২৪) নামের এক মোটরসাইকেলচালককে মাদক বিক্রেতা রিপন খান ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে কাঠের মুগুর দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দুই পা ও হাত ভেঙে দিয়েছে।

রাহাত ফরাজীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তানভির শাহারিয়ার তাকে সংকটজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠান। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী উপজেলা সরুলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কুলইরচর গ্রামের আনসার খানের ছেলে রিপন খান এলাকায় মাদক বিক্রি করে আসছে। রিপন খান দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেলচালক রাহাত ফরাজীকে মাদক বিক্রিতে প্রস্তাব দেয় কিন্তু রাহাত তাতে রাজি হয়নি। মাদক বিক্রির প্রস্তাবের বিষয়টি রাহাত স্থানীয়দের জানিয়ে দেয়। এতে রিপন খান ক্ষিপ্ত হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মোটরসাইকেল চালক রাহাত ফরাজীকে সরুলা যাওয়ার কথা বলে রিপন খানের সহযোগী জিয়াদ খান ভাড়া করেন। পরে তিনি তাকে ওই স্থানে নিয়ে যায়। ওই স্থানে থাকা রিপন খান ও তার সহযোগী শামিম খান ও রহমান মৃধা প্রকাশ্যে তাকে কাঠের মুগুর দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ও দুই হাত ভেঙে দেন এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করেন।

এমন দৃশ্য স্থানীয়রা প্রত্যক্ষ করলেও তাদের ভয়ে কেউ রাহাতকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি। তাদের মারধরে রাহাত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মৃত ভেবে তারা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রিপন খান, জিয়াদ খানসহ ৪-৫ জন রাহাত ফরাজীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং কাঠের মুগুর দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। তাদের ভয়ে আমরা তাকে রক্ষা করতে যেতে সাহস পাইনি। তারা তাকে মারধর শেষে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।

রাহাত ফরাজীর বাবা মজিবর ফরাজী বলেন, আমার ছেলে মাদক বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় রিপন খান, জিয়াত খান, শামীম খান ও রহমান মৃধা আমার ছেলেকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে দুই পা ও দুই হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভির শাহারিয়ার বলেন, রাহাতের অবস্থা খুবই সংকটজনক। তার দুই হাত, পা ভাঙা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াক হোসেন তপু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version