নিজস্ব প্রতিনিধি:

যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই মাঠের পর মাঠ শিমের ক্ষেতের দেখা মিলবে। শিমের লতা-পাতার সবুজ সমারোহের মাঝে গোলাপি সাদা ফুল যে কারো নজর কাড়বে। এর মধ্যেই কিছু কিছু গাছে শিম ধরতে শুরু করেছে। আর আগাম জাতের শিম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদরের বেথইর গ্রামের কৃষক মল্লিক মিয়া। শীতের আগেই চাষিরা আগাম রিফা জাতের শিম চাষ করেছেন। এখন সেই শিম বাজারে উঠাতে শুরু করেছেন। শিমের বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়,ফসলি জমিতে শক্ত সুতো ও বাঁশের তৈরি মাচার উপর মেলে ধরেছে শিম গাছের কচি ডগা। কচি ডগার মধ্যে উঁকি দিচ্ছে সাদা ফুল। কেউ কেউ শিম তুলছেন আর কেউ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমি থেকে শিম সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার মাটি আগাম সবজি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় দ্বিগুণ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কটিয়াদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে ১ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজির আবাদ হয়েছে। ১টি পৌরসভা ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে পৌর সদরে এসব শিমের চাষ বেশি হয়েছে।

উপজেলার পৌর সদরের বেথইর মল্লিক মিয়া বলেন, কটিয়াদী কৃষি অফিস ও উপসহকারি মঈনুল ইসলামের পরামর্শে আমি ২০ শতক জমিতে রিফা জাতের শিম চাষ করেছি। বর্তমান বাজারে শিমের ভালো দাম চাহিদা রয়েছে। সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় করতে পারবো বলে আমি আশা করছি। এখন শিম উঠানো শুরু না হলেও এক সপ্তাহর মধ্যে তুলতে পারব। রিফা শিম চাষে চারা রোপণ, সেচ দেওয়া,সার প্রয়োগ,নিড়ানি,কীটনাশক ও মাচা তৈরিসহ মোট ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

হালুয়াপাড়া গ্রামের শিমচাষি শরীফ মিয়া বলেন,আমার ১ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। চারা রোপনের ৩ মাসের মধ্যেই শিম পাওয়া যায়। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ দিয়ে গাছের পোকার উপদ্রব দমন করেছি। এখন শিম বিক্রি করা শুরু করেছি।

কটিয়াদী বøকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, তীব্র খরায় শিম ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হলেও চাষিরা সঠিক ঔষধ ব্যবহারে তা দমন করা গেছে। এবছর শিমের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে শিমের ভালো দামও রয়েছে। আমরা মাঠপর্যায়ে শিম চাষিদের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম ভূঞা বলেন,শিম শীতকালীন সবজি হলেও আমাদের দেশে আগাম শিমের চাষ করা হচ্ছে। তাই কৃষকরা দিন দিন এই আগাম জাতের শিম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। চাষীরা শিমসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি আবাদ করে থাকেন। এ বছর শিমের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারও সীমের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। বাজার এমন থাকলে সীম চাষীরা বেশ লাভবান হবেন। ভালোভাবে বর্ষা মৌসুমে অটোশিমের বীজ সংগ্রহ করতে পারলে আগামীতে এ শিমের চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। সার ও কীটনাশক কম ব্যবহার করে কিভাবে আগাম শিম উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version