আমের এখন ভরা মৌসুম। হিমসাগর, ল্যাংড়া, চৌসা, আম্রপালি, গোলাপখাস, ফজলি, ক্ষীরমন, লক্ষ্মণভোগ, মল্লিকা, হাড়িভাঙ্গা- একেককরে সব জাতের আম বাজারে আসছে। রসনাবিলাসীদের কাছে আমের গুরুত্ব যতটা, ঠিক ততটাই তারা অগুরুত্বপূর্ণ মনে করেন আমের আঁটিকে। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ফল হিসেবে আম যেমন উপকারী, তেমন আঁটিরও আছে অনেক গুণ। তাই ফেলে দেয়ার আগে জেনে নিন আঁটি শরীরে কোন কোন উপকারে লাগে।
প্রোটিন
আমের আঁটিতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি না থাকলেও বিভিন্ন প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। ‘লিউসিন’, ‘ভ্যালিন’ এবং ‘লাইসিন’-এর উপস্থিতি আমের আঁটিতে প্রোটিনের গুরুত্বকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছে। যারা মাছ, গোশত, ডিম খেতে পছন্দ করেন না, তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের জোগান দিতে পারে আমের আঁটি।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট
‘পলিফেনল’, ‘ফাইটোস্টেরল’-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে আঁটিতে। এই বীজে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং প্রোটিন বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরিতে কাজে লাগে।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
আমের আঁটিতে ‘আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’-এর পরিমাণ বেশি এবং ‘ট্রান্স ফ্যাট’ প্রায় নেই বললেই চলে। এই স্বাস্থ্যকর ফ্যাট হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক
খাবার থেকে বিষক্রিয়া বা কোনো সংক্রমণ হলে আমের আঁটির গুঁড়ো খাওয়া যেতে পারে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, আমের আঁটিতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল যৌগ থাকায় এই ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে। আয়ুর্বেদেও আমের আঁটির গুঁড়োর ব্যবহার রয়েছে।
হজমে সহায়ক
আমের আঁটিতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় তা খাবার হজম করতেও সাহায্য করে। পরিমিত পরিমাণে আমের আঁটি দীর্ঘ দিন ধরে খেতে থাকলে, তা বিপাকহার উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলে ওজন ঝরানোর পেছনেও আঁটির হাত রয়েছে, একথা বলাই যায়।
কিভাবে খাবেন আমের আঁটি?
আমের আঁটি রান্নার কোনো উপকরণ হিসাবে নয়, বরং মুখশুদ্ধি হিসেবে তা ব্যবহার করা যায়।
আমের আঁটি দিয়ে মুখশুদ্ধি তৈরি করবেন যেভাবে?
আম খাওয়ার পর পড়ে থাকা আঁটিগুলোকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকনো আঁটিগুলোকে এবার প্রেশার কুকারে ভালো করে সেদ্ধ করে নিন। তারপর আঁটির গায়ের শক্ত খোলা ছাড়িয়ে, ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। কড়াইতে বিটনুন এবং ঘি দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। কাচের শিশিতে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন।