দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

জহরুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি ইউজসির বাজেট পরীক্ষক দল ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মূল বাজেট পর্যবেক্ষণ করে এসব অনিয়ম খুঁজে পায়। ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

জানা গেছে, বাজেট পরীক্ষক দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় পর্যালোচনা করে মোট ২৪টি সুপারিশ করেছে। যেসব খাতে বাজেট পরীক্ষক দল অনিয়ম ও আর্থিক ক্ষতি খুঁজে পেয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বিধিবহির্ভূতভাবে উচ্চতর বেতনস্কেল প্রদান, অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি, বৃক্ষরোপণ খাতে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত ব্যয়, বালি ভরাট বাবদ নিয়মবহির্ভূত ব্যয়, শ্রমিক মজুরী খাতে অনিয়মিত ব্যয়, অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরিতে বসবাসরতগণের নিকট হতে নির্ধারিত হারে ভাড়া কর্তন না করা, অতিরিক্ত দায়িত্ব ভাতা প্রদান, শিক্ষকদের নিয়মবহির্ভূতভিাবে বইভাতা প্রদান, অগ্রিম সমন্বয় না করা, একাডেমিক বিভিন্ন পদে দায়িত্বপ্রাপ্তদের মোবাইল ভাতা প্রদান, গবেষণা বাবদ প্রদত্ত অগ্রিম অর্থ সমন্বয় না করা, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিকট থেকে নির্দিষ্ট হারে যাতায়াত ভাড়া কর্তন না করা, কমিশনের অনুমোদন ব্যতীত মাইক্রোবাস ক্রয়, ড্রাইভারদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান ইত্যাদি।

এদের মধ্যে বিধি বহির্ভূতভাবে সহকারী পরিচালক, সহকারী রেজিস্টার (৭ম গ্রেড হতে ৬ষ্ঠ গ্রেড), উপ-পরিচালক/উপ-রেজিস্ট্রার (৫ম গ্রেড হতে ৪র্থ গ্রেড) ও সমমানের কর্মকর্তাদের উচ্চতর বেতনস্কেল প্রদান করায় ২৪ লাখ টাকা, জাতীয় বেতনস্কেল-২০১৫ এর বিধান অমান্য করে শিক্ষকদের এন্ট্রি লেভেলে ৪টি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্টসহ বেতন নির্ধারণ করায় ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরিতে বসবাসরত শিক্ষকদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে ভাড়া কর্তন না করায় ৩০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া ডিন, ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টাগণ, চেয়ারম্যান, প্রক্টর, প্রভোস্ট, সহকারী প্রক্টর, সহকারী প্রভোস্টদের অতিরিক্ত দায়িত্ব ভাতা প্রদান করায় ৩০ লাখ টাকা, শিক্ষকদের বিধিবহির্ভূতভাবে বই ভাতা প্রদান করায় ৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, একাডেমিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়মবহির্ভূতভাবে মোবাইল ভাতা প্রদান করায় ৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা এবং গবেষণা বাবদ সমন্বয় ছাড়া অর্থ প্রদান করায় ১৯ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

এর পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ খাতে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত ব্যয়, বালি ভরাট বাবদ নিয়মবহির্ভূত ব্যয়, শ্রমিক মজুরী খাতে অনিয়মিত ব্যয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিকট থেকে নির্দিষ্ট হারে যাতায়াত ভাড়া কর্তন না করা, কমিশনের অনুমোদন ব্যতীত মাইক্রোবাস ক্রয় এবং ড্রাইভারদের ১০ম গ্রেডে বেতন প্রদান করায়ও অনিয়ম এবং আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে উল্লেখ করেছে ইউজিসির পরীক্ষক দল।

যেসব খাতে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হয়েছে সেসব খাতে প্রদানকৃত অতিরিক্ত অর্থ এবং যেসব খাতে কম ভাড়া কর্তন করা হয়েছে সেসব খাতের বকেয়া অর্থ সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে আদায় করে ইউজিসিকে অবগত করা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পদে নিয়োগ এবং পদোন্নতি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম এবং সরকারি নিয়ম অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ইউজিসির অনুমতি ব্যতীত গাড়ি ক্রয় না করার এবং সকল ক্রয় প্রক্রিয়া পিপিআর পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, কিছু বিষয় হয়ত সত্যি তবে সব অভিযোগ সঠিক নয়। কিছু ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। যেমন শিক্ষকরা অনেকে যে বাসায় থাকছেন সেটি কিন্তু কর্মচারীদের জন্য তৈরি, কম সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন। এই বাসার জন্য তাদের একইহারে ভাড়া কর্তন করা হবে কিনা সেটি একটা বিষয়। আবার বেতন, দায়িত্বভাতার যে কথা বলা হচ্ছে সেসব কিন্তু অর্থ কমিটি থেকে পাস হওয়ার পর বাস্তবায়ন হয়েছে। এ বিষয়ে উপরস্থ যারা আছেন রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার, ভিসি তারা বিস্তারিত বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, ইউজিসির পক্ষ থেকে আমাদের এ সংক্রান্ত কাগজ মেইল করা হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু অর্থ সংক্রান্ত তাই এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারছি না। এ বিষয়ে ট্রেজারার স্যার বলতে পারবেন।

বশেমুরবিপ্রবির ট্রেজারার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. মোবারক হোসেন বলেন, আমি এখানে এসেছি বেশি দিন হয়নি। এখনও এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ হাতে পাইনি। আপনারা আমাকে অথরিটির স্বাক্ষরযুক্ত হার্ড কপি প্রদান করলে দেখে বলতে পারবো।

এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ইউজিসির সদস্য এবং অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. মো: আবু তাহের বলেন, আমাদের বাজেট পরীক্ষক টিমের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী যেসব বিষয়ে অনিয়ম পাওয়া গছে সেসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জানানো হয়েছে। একইসাথে এসব বিষয়ে করণীয় সম্পর্কেও বলা হয়েছে। তারা যদি এগুলো না মানে তাহলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে অডিট আপত্তি যাবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন রয়েছে কিন্তু আর্থিক ক্ষেত্রে তারা সরকারি নিয়ম মানতে বাধ্য। আর সরকারি অর্থ ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। এটা একসময় না একসময় সমন্বয় করতেই হবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version