সামাজিক ন্যায়বিচারকে গুরুত্ব দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারা বিশ্বে সামাজিক ন্যায় বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে। বুধবার (১৪ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: প্লেনারিতে সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার’ শীর্ষ সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

এসময় টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সামাজিক ন্যায় বিচার, বৈশ্বিক জোটে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী ৫টি প্রস্তাবনা দেন।

এসময় তিনি বলেন, একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে। বিশ্বব্যাপী শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রয়াসে সামাজিক ন্যায়বিচারকে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এই জোটটি মান নির্ধারণে দরকষাকষির কেন্দ্র না হয়ে একটি পরামর্শ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

এসময় তিনি তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারে আরও বেশি অংশগ্রহণে যুক্ত কারার প্রস্তাব দেন। বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী জানান, অনগ্রসর ব্যক্তিদের সামজিক সুরক্ষা সুবিধা বাড়িয়েছে বাংলাদেশে । দেশের ৫ মিলিয়ন ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিয়েছে সরকার।

বিশ্বের পরিবেশ বান্ধব ১০০ পোশাক কারখানার অর্ধেকই বাংলাদেশে রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। পোশাক শ্রকিদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, স্বাস্থ্য সুবিধা বৃদ্ধি, ঝূুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে শিশুদের বিরত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কারখানার মান উন্নয়নে দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দেশে কর্মসংস্থান বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হয়েছে। এছাড়া, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হাইটেক পার্ক করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে ৫টি পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হলো-

১. এই জোটটিকে একটি মান-নির্ধারক বা দরকষাকষির ফোরামের পরিবর্তে একটি পরামর্শমূলক বা অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয় হবে।

২. বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায়বিচারকে এক আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক অন্য মহলের বিরূদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে এই জোটকে সতর্ক থাকতে হবে।

৩. এই জোটকে একটি নিয়মতান্ত্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার আওতায় সামাজিক ন্যায়বিচারকে একটি সংরক্ষণবাদী হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার না করে বরং এর ব্যাপক প্রসারে ভূমিকা রাখার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।

৪. শোভনকর্ম এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পৃক্ত করার জন্য এ জোটের বিষয়ে আইএলও’র নিজস্ব অংশীজনদের থেকে ব্যাপক সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।

৫. আমাদের তরুণ সমাজকে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ জোটকে মনোযোগী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সামরিক স্বৈরশাসকরা দেশ পরিচালনা করত। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর তিনি ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের সুযোগ পান। তারপর থেকে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য কাজ শুরু করে।

তিনি বলেন, আমার একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ ও উন্নত সোনার বাংলায় পরিণত করা। আমি বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করেছি। সূত্র : বাসস

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version