মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার গাজিটেকা এলাকার বাসিন্দা পর্তুগাল প্রবাসী শাহীন আহমদের ছেলে শাহরিয়ার শাহীন (১৮) পর্তুগাল থেকে কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরলেন। মৃত্যুর সাতদিন পর গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে রুহানের লাশ দেশে পৌঁছায়। সেখান থেকে স্বজনরা শনিবার রাত সাড়ে তিনটায় রুহানের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। লাশ পৌঁছার পর বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এসময় বাবা-মা আর স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। শনিবার সকাল এগারোটায় গাজিটেকা ঈদগাহ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে রুহানের লাশ দাফন করা হয়েছে। শাহরিয়ার শাহীন রুহানের বয়স মাত্র ১৮ বছর। বাবা-মায়ের বড় আদরের ছেলে ছিল সে। তাকে ঘিরে বাবা-মায়ের কতশত আশা-স্বপ্ন বুনে ছিল। কিন্তু তাদের সেই আশা আর স্বপ্নের প্রদীপ নিভে গেছে। কারণ মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার তাদের আদরের ছেলে রুহানের জীবনপ্রদীপ চিরতরে নিভিয়ে দিয়েছে। গত ২৭ মে পর্তুগালের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুহান মারা যান। জানা গেছে, শাহরিয়ার শাহীন রুহান চার ভাইয়ের সবার বড়। কয়েকমাস আগে রুহানের ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শে স্বজনরা তাকে ভারতে নিয়ে যান। সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এতে রুহানের শারিরীক অবস্থার উন্নতি ঘটে। কিছুটা সুস্থ হওয়ায় তার বাবা পর্তুগাল প্রবাসী শাহীন আহমদ তাকে পর্তুগালে নিয়ে যান। সেখানেও একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসা পেয়ে রুহান ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিল। কিন্তু কয়েকদিন আগে হঠাৎ রুহান অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর গত ২৭ মে পর্তুগালের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুহান মারা যায়। শনিবার সকালে রুহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, লাশবাহী গাড়িতে রুহানের মরদেহ রাখা। তাকে শেষ দেখার জন্য আত্মীয়-স্বজন ও সহপাঠীরা ভীড় জমাচ্ছেন। এ সময় তার লাশ দেখে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। চারিদিকে কান্নার রুল, বাসাত যেন ভাড়ি হয়ে উঠেছিল। রুহানের চাচা মাওলানা শাহেদ আহমদ জুয়েল জানান, রুহানকে তিনি কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন। রুহান তাদের বড় আদরের ভাতিজা ছিল। তার মৃত্যুতে তাদের পরিবারের শোকের ছায়া নেমেছে। তিনি রুহানের আত্মার মাগফেরাতের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। আদরের ধনকে হারিয়ে আত্মীয় স্বজন সকলে বাকরুদ্ধ।