মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বেতন ভাতা ফিরে পাওয়ার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্বামী-সন্তান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার আয়া তকমিনা বেগম। মঙ্গলবার (৩০ মে ) তিনি তার স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

কর্মসূচি পালনকালে আয়া তকমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে কয়েকমাস পূর্বে আয়া পদে নিয়োগ দেয়। মাদ্রাসার কিছু জমি নিয়ে স্থানীয় একজনের সাথে মাদ্রাসার সুপার জিয়াউল হক ও সভাপতি মনিরুল ইসলামের দ্বন্দ্ব চলছিলো। দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে সুপার ও সভাপতি তাকে বেতন সংক্রান্ত কাজ আছে বলে মৌলভীবাজার আদালতে নিয়ে যান। সেখানে কয়েকটি কাগজে তকলিমার স্বাক্ষর নেন‌। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে একই গ্রামের মঈনুল ইসলাম মনুর ছেলে জুমন মিয়ার নামে নারী নির্যাতন মামলা করান।
পরে তিনি জানতে পারেন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা করানো হয়েছে। পরবর্তীতে সুপার ও সভাপতির সাথে তকলিমা মামলার বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করায় তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তকলিমা আরও বলেন, বেতন ভাতা বন্ধ হওয়ায় বিগত পবিত্র ঈদুল ফিতর থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে মানবেতার জীবনযাপনসহ অনাহারে অর্ধাহারে বেহাল অবস্থায় দিন কাটছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে তকলিমার দুই শিশু সন্তান প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বলেন, ঘরে ভাত নাই, মার (মায়ের) চাকুরি নাই, কোথা থেকে খাবো। মায়ের চাকুরিটা ফিরে পেলে আমরা খেয়ে পড়ে বাঁচাতে পারবো।
এ বিষয়ে জুড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে নারী নির্যাতন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জুড়ীর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতি. দায়িত্ব) শাহেদা আকতার সম্প্রতি আয়াকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানোর সত্যতা পাওয়ায় মাদ্রাসার সভাপতি মনিরুল ইসলামসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version