মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়ন এর হিরামতি গ্রামে গত দু’দিন আগে বিষধর সাপের ছোবলে মারা যাওয়া গৃহবধুর লাশ বিভিন্ন হাসপাতাল আর ওঝার দুয়ারে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে লাশের সৎকার (দাহ) সম্পন্ন করা হয়েছে।

নিহতের স্বামী বাবুল সিংহের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমার স্ত্রী ঝর্ণাকে বাঁচাতে। যে যা বলেছে সেই চেষ্টা করেও আমরা ব্যর্থ হয়েছি। দু’দিন ধরে আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল, কবিরাজ, ওঝার নিকট দ্বারস্থ হয়েছি। কেউ বাঁচাতে পারলো না আমার স্ত্রীকে। কথা গুলো বলতে বলতে একসময় তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
নিহতের স্বামীর বোন (ননদ) শিবলী রাণীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, গত দু’দিন আমরা আশা ছাড়িনি। যে- যেভাবে বলেছে, আমরা সব চেষ্টা করেছি সুস্থ করে তোলার জন্য। বুধবার মানুষের কথা মত সকালে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজারের অবস্থিত খৃষ্টান মিশনারী পরে বিকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে যখন চিকিৎসকরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন, তখন আমরা নিরাশ হয়ে ভাবীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। মায়ের মৃত্যুর বছর না যেতেই ভাবীকে হারালাম।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৯টায় ভাবীর মরদেহের সৎকার ( দাহের) আনুষ্ঠানিকতার সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মাধবপুর ইউনিয়নের ঐ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাতিম মিয়া জানান, গত দু’দিন পর বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় হিরামতি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলাই নদীর পাশে ঝর্ণা রাণীর সৎকার (দাহ) সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৩ মে (মঙ্গলবার) দুপুরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়ন এর হিরামতি গ্রামের বাবুল সিংহের স্ত্রী এক সন্তানের জননী ঝর্ণা সিংহা নিজ বাড়ির গোয়াল ঘরের পেছনে কচু কাটতে যান। এ সময় তার ডান হাতে বিষধর সাপ ছোবল মারে। পরে পরিবারের লোকজনকে জানালে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েও তাকে বাঁচাতে পারেন নি। পরে হাসপাতাল থেকে ঝর্ণাকে মৃত ঘোষণা দিয়ে পরিবারের কাছ হস্তান্তর করলেও পরিবারের সদস্যরা ঝর্ণার শরীর গরম থাকার কারণে কবিরাজের মাধ্যমে ঝাঁড়ফোক দেন। পরে কবিরাজও তাকে মৃত ঘোষণা করেছিল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version