মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের হিরামতি গ্রামের এক গৃহবধুকে সাপে ছোবল দেয়ার পর ডাক্তার এবং ওঁঝা কর্তৃক মৃত ঘোষণার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও মরদেহ সৎকার না করে ঝাড়-ফুঁকে বাঁচানোর চেষ্ঠা করছে পরিবার।
জানা যায়, গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে দেখা দেয় মতবিরোধ। কেউ বলছেন গৃহবধূ মারা গেছেন, আবার কেউ বলছেন মারা যায়নি। এখানেই মহা ঘটেছে বিপত্তি।
এ বিষয়ে নিহতের স্বামীর বোন (ননদ) শিবলী রাণী সিনহার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মঙ্গলবার আমাদের বাড়ীতে ৪জন ওঁঝা এসে বৌদিকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে গেছেন। রাতে বৌদির শরীর শক্ত হয়ে গেলেও সকাল থেকে বৌদীর শরীর নরম হয়ে গেছে। তার হাত-পা এখন নাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তাই আমরা সৎকার না করে বৌদিকে নিয়ে কুলাউড়া মিশনে যাচ্ছি।
এদিকে ঝর্ণার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য আসা একই গ্রামের রাজীব সিংহ, নিশি সিংহ, বাবুল সিংহ, প্রদীপ সিংহরা জানান, গৃহবধুর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য গ্রামবাসী সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন করলেও হঠাৎ গৃহবধূর শরীর শক্ত থেকে নরম হয়ে যাওয়ায়। এর জন্য দাহ এর কাজ না করে তার পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য কুলাউড়া নিয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য: মঙ্গলবার দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়ন এর হিরামতি গ্রামের বাবুল সিংহের স্ত্রী ঝর্ণা সিংহা নিজ বাড়ির গোয়াল ঘরের পেছনে কচু কাটতে যান। এ সময় তার ডান হাতে বিষধর সাপ ছোবল মারে। পরে পরিবারের লোকজনকে জানালে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েও তাকে বাঁচাতে পারেন নি। পরে হাসপাতাল থেকে ঝর্ণাকে মৃত ঘোষণা করে পরিবারের কাছ হস্তান্তর করলেও পরিবারের সদস্যরা ঝর্ণার শরীর গরম থাকার কারণে কবিরাজের মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক দেন। পরে কবিরাজও তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে বলেন, ঝর্ণার হাতে যতক্ষণ বাঁধা ছিল সে সুস্থ ছিল। ইঞ্জেকশন পুশ করার জন্য তার হাতের বাঁধন খুলে দেয়ার পরপরই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। আর জ্ঞান ফিরেনি।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ ফজলুলজ্জামান জানান, ইঞ্জেকশন দেয়ার পূর্বেই ওই নারীর শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়েছিল তাই ইঞ্জেকশন দিয়েও বাঁচানো সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।