দীর্ঘ দিন থেকে চলে আসা ময়লার বাগাড় নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মসূচি পালন করে আসছেন।ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের বিষয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর মেয়র মহসিন মিয়া মধু বৃহস্পতিবার (১৮ মে) গণমাধ্যমে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কলেজ রোডস্থ ময়লার ভাগাড়টি (ট্রেঞ্চিংগ্রাউন্ড) পৌরসভার সৃষ্টিলগ্ন থেকে স্থাপিত ছিল। তখন এলাকায় জনবসতি, বাসা-বাড়ি স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ছিল না।
কালের বিবর্তনে এলাকায় জনবসতি পূর্ন সহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা স্থাপিত হলে আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান/মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ময়লার ভাগাড়টি অপসারণের চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পৌরসভার রাজস্ব দিয়ে ভাগাড়ের জন্য জমি ক্রয় করা সম্ভব ছিল না বিধায় বিশ্ব ব্যাংকের আওতায় নগর উন্নয়ন প্রকল্পের (UGIIP-II) মাধ্যমে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার জন্য ভাগাড় নির্মানের (ডাম্পিং গ্রাউন্ড) ভূমি ক্রয়ের অর্থ সংস্থান করা সম্ভব হয়।
তাই ভাগাড় নির্মানের জন্য ভূমি ক্রয় করার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার বরাবরে আবেদন করি।
তার প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক শ্রীমঙ্গল উপজেলার জেটি রোডে প্রায় ২,৪৩৮৩ একর ভূমি ভাগায় (ডাম্পিং ষ্টেশন) স্থাপনের জন্য অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং অধিগ্রহণের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমোদন করা হয় এবং ভূমির মূল্য বাবদ ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৯০ টাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা প্রদানের জন্য পত্র প্রেরণ করা হলে পৌরসভা এ টাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেয়।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, ভূমি পৌরসভাকে হস্তান্তর করেন। সেই সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রীমঙ্গল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন ।
ভূমি পৌরসভার নামে নামজারি করা হয়। ভূমি বুঝিয়ে দেয়ার পর জনৈক ব্যক্তি স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্ট রিট পিটিশন দাখিল করেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করেন।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রিট পিটিশন হাইকোর্ট খারিজ করে দেন। একই সালে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে পৌরসভার ডাম্পিং ষ্টেশনের জন্য জন্মকৃত জায়গায় সীমানা পিলার স্থাপনের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়।
ঠিকাদার ইট, বালু, সিমেন্ট অন্যান্য মালামাল ও সরঞ্জামাদি ডাম্পিং ষ্টেশনে নিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজনসহ ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া(আনর) বাঁধা প্রদান করার ফলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
কাজের সাইটের সকল মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়, মামলার বিষয়টি উর্ধ্বতন সকলকে অবহিত করা হয়। মামলার বিষয়ে আজ পর্যন্ত আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় মৌলভীবাজার রোডে জেটি রোড এলাকার সড়কের উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য একটি পাকা গেইট নির্মাণ করেন।
যাতে পৌরসভার কোন গার্ভেজ ট্রাক এলাকার যেতে না পারে। বর্তমানে অধিগ্রহণকৃত ভূমি নিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হবে বলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৮ জনকে বিবাদী করা হয়। বিবাদী সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, ২নং বিবাদী সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়, শুনং বিবাদী মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, ৪নং বিবাদী বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট, ৫নং বিবাদী জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার, ৬নং বিবাদী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ৭নং বিবাদী ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৌলভীবাজার, ৮নং বিবাদী মেয়র, শ্রীমঙ্গল পৌরসভা।
এমতাবস্থায় ঠিকাদারের মালামাল লুটের বিষয়ে মামলা, মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ মামলা চলমান থাকায় ভাগাড়টি অপসারণের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আইনী জটিলতার বিষয়ে বিবেচনা করতে উল্লেখিত বিষয়ে কোন অনাকাঙ্খিত পরিবেশ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে নজরদারিতে রেখে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে তিনি সর্বসাধারণকে এসংক্রান্ত বিষয়ে অবহিত করেছেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version