মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় আটকের পর জসিম উদ্দিন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার (১৩ই মে) রাতে মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা থেকে তাকে আটক করেন মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাকির আহমদ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আটক জসিম উদ্দিন মৌলভীবাজার শহরের বেরিরচর এলাকায় বসবাস করেন। তার স্থানীয় ঠিকানা হবিগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। একটি মোবাইল চুরির জিডির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে জসিমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে জসিম অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয়।
জসিমকে আটক করা এএসআই শাকির আহমদ বলেন, শনিবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে মৌলভীবাজার চৌমুহনী থেকে মোবাইল চুরির জিডির পরিপ্রেক্ষিতে জসিম উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে মোবাইল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তির পরিপ্রেক্ষিতে আরও দুই অপরাধী সুফিয়ান ও মারুফকে গ্ৰেফতারের জন্য বের হই। এরপর সন্ধ্যার দিকে আমার কাছে খবর আসে জসিম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান‌।
শনিবার রাতে হাসপাতালে জসিমের বাবা আরজু মিয়া বলেন, প্রথমে শুনি আমার ছেলেকে ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর আমি ছেলের স্ত্রীকে থানায় পাঠাই। থানায় যাওয়ার পর তার মোবাইলফোন বন্ধ পাই। পরবর্তীকালে আমরা হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলের মরদেহ পড়ে আছে।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিনেন্দু ভৌমিক বলেন, রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা দেখে ইসিজি করান। ইসিজি রিপোর্ট আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় আমাদের মিডিয়ার মুখপাত্র। এ বিষয়ে কিছু জানতে হলে তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।
পরে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় বলেন, পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়নি। হাসপাতালে যাওয়ার পর সে মারা গেছে। মোবাইল টেকনোলজিতে তার এনআইডি দেখানোর কারণে জসিমকে শনাক্ত করে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জসিম আরেক আসামির নাম বলে। পুলিশ ওই আসামিকে আটক করতে গেলে সে পুলিশ হেফাজতে অস্বস্তিবোধ করে। তখন তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু পরিবারের লোকজন মানতে নারাজ। তারা বলেন পুলিশের মাইরে হাতে জসিমের মৃত্যু হয়েছে।
Share.
Leave A Reply

Exit mobile version