হলি সিয়াম শ্রাবণ: ‘ফ্যানের নিচে বাতাস খাওয়ার চাকুরি আমরা করিনা। ছাগল তাড়ানো, চোর দৌড়ানো, গাছ লাগানো ও গাছ বিক্রি আমাদের কাজ। জনপ্রতিনিধি ও ইউএনও সাহেবদের মতো সকালে বসে ফ্যানের বাতাস খেয়ে বিকেলে চলে গেলাম। এটা আমাদের চাকুরির ধরন নয়। আমার যখন দরকার তখন অফিসে বসব। সে (ইউপি চেয়ারম্যান) অভিযোগ করার কে? আমি কি তার অধিনে চাকুরি করি। তাকে কি দিনে ১৮ বার সালাম দিতে হবে।’
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মুক্তাদির শাহীন সম্পর্কে এমন বেফাঁস ও মানহানিকর মন্তব্য করেন বন অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ লুৎফুর রহমান।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা গৌরীপুরে অফিসে যান না বলে অভিযোগ আনেন বোকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান আল মুক্তাদির শাহীন। অভিযোগের সত্যতা জানতে মোঃ লুঃফুর রহমানকে ফোন করেন সাংবাদিক মশিউর রহমান কাউসার। তার প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত বন কর্মকর্তা অফিসে আসেন না, তাকে কোন কোনদিন অফিসে পাওয়া যায়না বলে ৯ মে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সাংবাদিকদের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১০ মে সরজমিনে বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে ওই কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিনও কার্যালয়ে না পেয়ে বিকেলে বন কর্মকর্তা লুৎফুর রহমানের মোবাইলে কল দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চান সাংবাদিক মশিউর রহমান কাউসার।
ইউপি চেয়ারম্যানের এমন অভিযোগের কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে ওই বন কর্মকর্তা বলেন- ‘এগুলো মুর্খ্য পোলাপান, মানুষ আবেগে ভোট দিছে। এখন ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করছে। আমার ভাই একজন উপজেলা চেয়ারম্যান। আমি জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি ছিলাম। আমারে ভয় দেখায়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন- ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন আবেদন ছাড়াই গাছের লটের টেন্ডারের বিডির (ব্যাংক ড্রাফট) টাকা উত্তোলন করতে আমার কাছে বিভিন্ন লোক পাঠাচ্ছিল। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বিডির টাকা ফেরত না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।
কর্মস্থলে না থাকার বিষয়ে লুৎফুর রহমান বলেন- তিনি বর্তমানে ৬ উপজেলার দায়িত্বে আছেন। সম্প্রতি সীমান্তবর্তী উপজেলায় বেশি সময় দিতে হচ্ছে তাঁকে। গৌরীপুরে তেমন কোন কাজ না থাকায় সপ্তাহে দুই/একদিন অফিস করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন চিকিৎসাজনিত কারনে ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বোকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান আল মুক্তাদির শাহীন এ বিষয়ে বলেন- আমার ইউনিয়নে নতুন রাস্তায় বৃক্ষরোপনের জন্য বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপনের জন্য গৌরীপুরে বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েছিলাম চারা ক্রয়ের জন্য। তিনদিন অফিসে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সাংবাদিকদের অবগত করেছিলাম।
সাংবাদিকের প্রশ্নের পর বন কর্মকর্তার জবাব শুনে তিনি বলেন- পাগল ও উন্মাদ না হলে একজন সরকারি কর্মকর্তা এমন উগ্র উদ্ধৃত মন্তব্য করতে পারে না। তাঁর বিরুদ্ধে ওই বন কর্মকর্তা যে অভিযোগ তুলেছেন তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মনগড়া।
টিএমবি/এস