দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

 কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: এক বছরের সেতুর নির্মাণ কাজ ঠিকাদার শেষ করেছেন প্রায় তিন বছরে। কিন্তু সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ না করেই পালিয়েছেন তিনি। এতে সেতু এলাকায় স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। চরম দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ২৫ মিটার পিসি গার্ডার সেতুটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তরুনমোড়-তারাপুর সড়কের গড়েরমাঠ বিলের ওপর অবস্থিত।

স্থানীয়রা বলছেন, জনপ্রতিনিধি ও প্রকৌশলীদের তদারকির অভাবে ঠিকাদার কচ্ছপ গতিতে কাজ করেছেন। আর এখন সড়ক নির্মাণ না করেই প্রায় তিনমাস ধরে পলাতক রয়েছেন ঠিকাদার। এতে চরম জনদুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।

এলাকাবাসী জানায়, গড়েরমাঠ সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম। উপজেলার সদকী, জগন্নাথপুর, শিলাইদহ ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববর্তি খোকসা উপজেলায় গোপকগ্রামসহ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। একবছরের কাজ তিন বছরে শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না করেই পালিয়েন ঠিকাদার। বিগত তিনমাসেও সেতু এলাকায় দেখা যায়নি তাকে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চলাচলকারীরা। নিত্য প্রয়োজন মেটাতে ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক দিয়েই চলাচল করছেন তাঁরা। সেখানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। জনকল্যাণের জন্য নির্মিত সেতুই এখন চরম জনদুর্ভোগের কারণ বলছেন তাঁরা।

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, প্রায় দুই কোটি ৪৯ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নড়াইল জেলার লোহাগাড়া থানার লক্ষীপাশার মেসার্স নূর কনষ্ট্রাকশন। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানান অজুহাতে ঠিকাদার এক বছরের কাজ শেষ করেন ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে। অবশেষে সেতুর কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না করেই পালিয়ে গেছে ঠিকাদার। কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও প্রকৌশলীরা খোঁজ করছেন ঠিকাদারকে।

গড়েরমাঠ সেতু এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতু নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়কটি জরাজীর্ণ। জরাজীর্ণ সড়কের দুইপাশে কাঁটের খুঁটি পুতা রয়েছে। সড়কটি চলার অনুপযোগী। মানুষ ও যানবাহন সেতুর পাশের বিকল্প জরাজীর্ণ সড়ক দিয়ে ভোগান্তিতে চলাচল করছেন। যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে পাঁয়েহেটে সেতু এলাকা পারাপার হচ্ছেন। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে সেতুর জরাজীর্ণ সংযোগ সড়ক দিয়েই চলাচল করছেন। এসময় কথা হয় ভ্যানচালক শাহিন আলম (৪২) বলেন, তিনি প্রায় ২৩ বছর ওই সড়কে ভ্যান চালাচ্ছেন। কিন্তু গড়েরমাঠ ব্রীজ (সেতু) তাকে যে পরিমান কষ্ট দিচ্ছে, তা তিনি কোনোদিনও ভুলবেনা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গরীবের কষ্ট দেখার মানুষ নেই। কষ্ট শুধু জনগণের। তা না হলে এতো ছোট ব্রীজে এত সময় লাগে, এতো ভোগ হয় মানুষের।

সিএনজি চালক মুন্নাফ হোসেন বলেন, চলাচলের রাস্তা না করে কোনোমতে সেতু করেই পালিয়েছে ঠিকাদার। মানুষ এখনো নিচের ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছেন। তিনি দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানান।বয়োজ্যেষ্ঠ ভ্যানচালক মো. লুৎপর রহমান বলেন, এমন কাম মাইনসে (মানুষ) করে। এতোটুকু ব্রীজ করতে ঠিকাদার একশ বের (বার) কাম (কাজ) বন্ধ করে করে পলায়ছে। তাঁর দাবি, সেতু এলাকায় তাঁর ভ্যান গাড়িটি তিনবছরে কয়েকবার উল্টে তিনি চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

জানা গেছে, গড়েরমাঠ সেতু সড়ক দিয়ে চলাচল করেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ আল বাকী বাদশা। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা (প্রকৌশলী) তাঁদের খুব ভোগান্তি দিয়েছেন। সরকারের জনগণের কল্যাণে সেতু নির্মাণ করলেও, কর্তৃপক্ষের অবহলোয় তা ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। সদকী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিনহাজুল আবেদীন দ্বীপ বলেন, নানান তালবাহানার পরে সেতু নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করেই ঠিকাদার পালিয়েছে। জনস্বার্থে মেয়র সাহেব সরু সড়ক তৈরি করেছিল। সে সড়কও ভেঙে গেছে। এখন সেতুটি জনগণের গলার কাঁটা হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে জানতে ঠিকাদার মো. টিপু সুলতানকে মুঠোফোনে কল দিলে তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, সেতু করতে গিয়ে নানান অজুহাতে কাজ বন্ধ রেখে ঠিকাদার কয়েকবার পালিয়েছিল। এবার আবার সংযোগ সড়ক না করেই পালিয়েছেন। তিনি ও জনপ্রতিনিধিরা মিলে ঠিকাদারকে খুঁজছেন। কিন্তু কোথাও ঠিকাদারকে পাওয়া যাচ্ছেনা। কিভাবে দ্রুত সড়ক নির্মাণ করা যায়, সে ব্যাপারে তিনি চিন্তা ভাবনা করছেন বলে জানান। জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রকৌশলীকে নির্দেশ প্রদান করা হবে।

 

টিএমবি/এইচএসএস 

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version