বিগত দুটি বছর মহামারি করোনার ভয়াল থাবা জনজীবন থুবড়ে পড়েছিল। মহামারি কাটিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পালিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহৎ একটি উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতর এর ঈদের নামাজে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভীড়। শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৫টা থেকে শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তে হবিগঞ্জ রোডস্থ ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ মাঠে উপস্থিত হতে থাকেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই ঈদগাহ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মাঠ পূর্ণ হয়ে প্রধান সড়কে মুসল্লিদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছ।

শাহী ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রথম জামাত সকাল পৌনে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতে অংশ নেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ, অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মোঃ মহসিন মিয়া মধু, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগন।

শাহী ঈদগাহ মাঠে এবারও ঈদুল ফিতরের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জামাত শুরু হয় সকাল পৌনে ৭টায়। এতে ইমামতি করেন শ্রীমঙ্গল থানা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. আব্দুল কুদ্দুস নিজামী। প্রথম জামাত চলাকালীন বিপুল সংখ্যক মুসল্লি বাইরে রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকেন। প্রথম জামাত শেষ হলে বিপুল মুসল্লিদের দীর্ঘ সারির কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় জামাত শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। এতে ইমামতি করেন শ্রীমঙ্গল নতুন বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা জামাল উদ্দিন। তৃতীয় জামাত সকাল সোড়া ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন আলাবক্স জামে মসজিদের ইমাম।
শাহী ঈদগাহ মাঠ ছাড়াও শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদে দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা হিফজুর রহমান হেলালী এবং ২য় জামাত ইমামতি করেন মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ আব্দুল মুমিন, কালিঘাট রোডস্থ বায়তুল আমান জামে মসজিদেও দুইটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুল মালিক, ২য় জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ছানী ইমাম হাফেজ মাওলানা আবু মুসা। ভানুগাছ রোডস্থ রেলগেইট মারকাজ মাদরাসা জামে মসজিদ, শ্যামলী জামে মসজিদ, দেওয়ানি জামে মসজিদ, বায়তুস সালাম জামে মসজিদ, জালালিয়া জামে মসজিদ, পূর্বাশা জামে মসজিদ,বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, এলাহি জামে মসজিদ, শহরতলীর খাসগাঁও জামে মসজিদ, দক্ষিণ মুসলিমবাগআল মদিনা জামে মসজিদ, মধ্যমুসলিমবাগ বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ, গাজিপুর গাজীপুর আল আকসা জামে মসজিদসহ শহরতলী এবং উপজেলার আরো অন্যান্য মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। পরে মুসল্লিরা মোসাফাহা ও কোলাকুলির মাধ্যমে পরস্পরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version