বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার সব ধরনের সুযোগ থাকার পরও, সেটা গ্রহন করেননি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে বহু মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবার পরামর্শ দিলেও তিনি জানান, সাধারন মানুষ যেই সুযোগ পায় না তিনি সেটা নিতে চান না।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহু বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর লিভারের সমস্যাও দেখা দেয় তার। এ ছাড়া তিনি অপুষ্টিসহ সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। গত ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত সোয়া ১১ টায় ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে জন্মগ্রহণ করেন ডা. জাফরুল্লাহ। বাবা-মায়ের দশ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি ছিলেন একজন বাংলাদেশি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য সক্রিয়তাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক স্বাস্থ্য বিষয়ক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঔষধ নীতি’ ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

কর্ম জিবনে ডা. জাফরুল্লাহ এমনই একজন মানুষ ছিলেন যার এক জিবনের কর্ম ছিল বহু জিবনের সমান। তার কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান। ১৯৮৫ সালে ফিলিপাইনের র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার এবং ১৯৯২ সালে তাকে সুইডেন থেকে রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পান। তিনি ২০০৯ সালে কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন থেকে ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি পান। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে তাকে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরো অ্যাওয়ার্ড।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খপ্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী সহ সমাজের নানান স্তরের মানুষ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version