মৌলভীবাজারের জুড়ীতে দুর্গম পাহাড়ি বনাঞ্চল থেকে হাতি দিয়ে বড় বড় আকৃতির গাছ টেনে সমতলে নিয়ে আসা হচ্ছে। গত কয়েকদিন থেকে জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের কচুরগুল কুচাইথল পাহাড়ে সরেজমিনে এমন অমানবিক দৃশ্য দেখা যায়। পাশাপাশি স্থানীয়রা এই হাতিটি গর্ভবতি উল্লেখ করে বন্যপ্রাণির প্রতি এমন নির্দয় আচরণের চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জানা যায়, পৈতৃক সম্পত্তি সুত্রে হাতিটির মালিক স্থানীয় ধনকুব পরিবারের মাতাব মিয়া ও আসুক মিয়া।
এদিকে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ি কোন প্রাণি দিয়ে ভারি, অমানবিক ও নিষ্টুর কাজ করানো আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।
হাতির মাহুত দুদু মিয়া জানান, কুচাইথল পান পুঞ্জির উচে খাসিয়া জুড়ীর জনৈক এক কাঠ ব্যবসায়ীর নিকট তার দখলীয় পাহাড়ের ২৫টি বনজ গাছ বিক্রি করেন। ওই কাঠ ব্যবসায়ী গাছগুলো কেটে সমতলে নিয়ে আসার জন্য দৈনিক পাঁচ হাজার টাকা (মাহুতসহ) মজুরিতে হাতিটিসহ ভাড়া করেছেন। মাহুতের দাবি গাছ কাটার সরকারি অনুমতি থাকায় তারা শুধু গাছগুলো টেনে সমতলে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তিতে গত বুধবার থেকে হাতিটি দিয়ে কাজ করছেন। সবগুলো গাছ সমতলে পৌঁছাতে আরো কয়েক দিন সময় লেগে যাবে। তবে হাতিটি গর্ভবতি উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি অনিশ্চিত সুত্রে জানিয়ে অর্থ উপার্জনে নিরীহ বোবা প্রাণিটির উপর এমন নির্দয় আচরণের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জুড়ী বন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আলাউদ্দিন জানান, আমরা খোঁজ নিয়েছি, হাতিটি গর্ভবতী নহে। তবে প্রয়োজনে মালিক পক্ষ হাতিটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের এসিএফ (শ্রীমঙ্গল) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, এক সময় পোষা হাতি দিয়ে গাছ টানানো কোন বিধি নিষেধ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ি কোন প্রাণি দিয়ে নিষ্টুর কোন কাজ করানো অমানবিক, আইন বর্হিভুত ও দন্ডনীয় অপরাধ। খোঁজ নিয়ে এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।