দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

 

তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বালাসিঘাট। বছরের অর্ধেক সময় এখান থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত নৌকা চলে। আবার শুকনা মৌসুমে পানি কমতে শুরু করলে বালাসিঘাট থেকে প্রায় চার কিলোমিটার অংশে বালুচর জেগে ওঠে। নভেম্বর থেকে প্রায় এপ্রিল মাস পর্যন্ত এই বালুচর স্থায়ী হয়। বছরের এই কয়েক মাস এ অংশে ঘোড়ার গাড়িতে বালাসিঘাট থেকে বাগুরিয়া পর্যন্ত যেতে হয়। এরপর শ্যালোচালিত নৌকাযোগে যেতে হয় বাহাদুরাবাদ ঘাট।বৃহস্পতিবার সকালে বালাসিঘাটে ইয়াসিন আলীর সঙ্গে কথা হয়। আয় রোজগারের কথা জানতে চাইলে ইয়াসীন বললেন, ‘পোত্তেকদিন সোমান কামাই হয় না। কোনো দিন ৬০০ ট্যাকা, কোনো দিন ৫০০, কোনো দিন ৩০০ ট্যাকা কামাই হয়। কোনো দিন তো কামাই-ই হয় না। ওদিকে বাজারোত জিনিসপাতির দাম বাড়ি গ্যাচে। আর পোত্তেকদিন ঘোড়াক খাওয়ান নাগে ৩০০ ট্যাকার খাবার। কামাই না হলেও ঘোড়াক খাওয়ানোই নাগে। তকন দেনা করি ঘোড়াক খাওয়াই। কষ্ট করি সোংসার চলব্যার নাগচি। লোনের কিসতিও দেওয়া নাগে। যেদিন এনা কামাই হয়, সেদিন আগের দেনা শোদ (শোধ) করতে ট্যাকা শ্যাষ হয়া যায়। ঘুরি–উল্টি হিসাব করি দেকা যায়, ঘোড়ার কামাই ঘোড়ায় খায়।’আলাপে জানা গেল, আগে এই পথ ধরেই গাইবান্ধার বেশির ভাগ মানুষ জামালপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকায় যেতেন। তবে এখন আর মানুষ কষ্ট করে ঘোড়ার গাড়িতে চড়তে চান না। তাই ঢাকা বা ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা এখন ঘোড়ার গাড়ি আর হাঁটাহাঁটির ঝক্কি এড়াতে সরাসরি বাস বা রেলপথ বেছে নেন। তাই কয়েক বছরে ঘোড়ার গাড়ির যাত্রী অনেক কমে গেছে।তারপরও গাড়ি চালানোর কারণ জানতে চাইলে ইয়াসিন আলী বলেন, ‘বাড়িত বসি থাকি কী করি! বসি থাকলে মানষে খারাপ কয়। বউ ক্যাচ ক্যাচ করে। আর ছোলপোল গুলাক কী খিলামো? তাই কামের মদ্দে আচি। কাম না দেকলে মানষে তো ট্যাকাও ধার দিব্যার চায় না।’

গাইবান্ধার বাগুরিয়া গ্রামে ইয়াসিন আলীর বাড়ি। গ্রামটি সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের অন্তর্গত। কয়েক বছর আগেও ইয়াসিনের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। পৈতৃকসূত্রে ১০ বিঘা জমি পেয়েছিলেন ইয়াসিন। এক বিঘা বসতভিটায় ছিল আধা পাকা বাড়ি আর গোলাভরা ধান। তাঁর অধীনে কাজ করতেন দু-তিনজন শ্রমিক। তবে এখন সবই ইয়াসিন আলীর স্মৃতি। সবকিছু কেড়ে নিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন।

তিন বছর আগে মাত্র চার হাজার টাকায় চার শতক জমি কিনেছিলেন ইয়াসিন। চরাঞ্চলের প্রতি শতক জমির দাম এক হাজার টাকা। বালুচরের ওই জমিতেই একচালা ঘর তুলে বাস করেন তিনি। সবকিছু হারিয়ে দিনমজুরের কাজ করতে ইয়াসিন। তবে বছরের বেশির ভাগ সময় কাজ থাকে না। তাই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ঘোড়া কেনেন। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে গাড়িটি তৈরি করেছেন। এক বছর ধরে বালাসিঘাটের চরে ঘোড়ার গাড়ি চালাচ্ছেন। এভাবেই কোনোরকমে চারজনের পরিবার নিয়ে কোনোরকমে দিন কাটছে ইয়াসিনের।

কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। নদীভাঙনের কারণে বেশির ভাগই কমবেশি অভাবী। যে পরিমাণ ত্রাণ বরাদ্দ পাই, তা সবাইকে দেওয়া সম্ভব হয় না।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version