মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত চীনে চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভরে গেছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অক্সিজেনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

বেড ও রক্তের জন্য হাহাকার করছে মানুষ। শেষকৃত্যের স্থানগুলোতে মৃতদেহের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। শ্মশানকর্মীরা সৎকারে হিমশিম খাচ্ছেন। ফাঁস হওয়া চীনা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুসারে-দেশটিতে করোনাভাইরাস গাণিতিক হারে বাড়ছে। একদিনে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার এমন সংক্রমণের সংখ্যা সারা বিশ্বে রেকর্ড। খবর আনন্দবাজার, হিন্দুস্থান টাইমস, ব্লুমবার্গ নিউজ, সিএনএন, বিবিসি ও রয়টার্সের।

শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চীনে হু হু করে ওমিক্রনের নতুন উপধরন বিএফ.৭ বাড়ছে। সাংহাই ও বেইজিংসহ ছোট-বড় সব শহরের হাসপাতালগুলো করোনা আক্রান্ত রোগীতে ভরে গেছে। হাসপাতালগুলোয় রোগী রাখার জায়গা নেই। বেড ও আইসিইউ’র চরম সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের করিডোরে রোগীদের রাখতে আত্মীয়-স্বজনরা বাধ্য হচ্ছেন। চীন সরকার জিরো-কোভিড নীতি প্রত্যাহার করার পরপরই সারা দেশে হু হু করে বাড়তে শুরু করে সংক্রমিতের সংখ্যা।

একদিনে চীনে ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার এ রেকর্ডসংখ্যক সংক্রমিতের ঘটনা ঘটে। আরও চমকে ওঠার মতো বিষয় হলো-ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ২৫ কোটি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার সিএনএন জানায়, চীনের স্থানীয় জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (এনএইচসি) বৈঠকে-করোনা রোগীদের চিকিৎসার করুণ বিষয়টিও উঠে এসেছে। এনএইচসির বৈঠকের তথ্য চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

চীনে কত মানুষ আক্রান্ত, তার সঠিক পরিসংখ্যান সে দেশের সরকার এখনও প্রকাশ করেনি। তবে এ পরিসংখ্যান সত্যি হলে দেশটির প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ এ মুহূর্তে করোনা আক্রান্ত। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিভাগের অধ্যাপক বেন কাউলিং বলেন, এ সংখ্যা বিশ্বাসযোগ্যই মনে হচ্ছে। তবে এ হিসাব সত্য হলে আগামী দিনগুলোয় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯ জন। চলতি মাসে করোনায় ৮ জনের মৃত্যুর কথা চীন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে।

ভারত ভ্রমণে ‘কোভিড নেগেটিভ সনদ’ বাধ্যতামূলক হচ্ছে : কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, এমন দেশগুলোর নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ করতে করোনার ‘নেগেটিভ’ ফলের সনদ বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। চীনে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির উদ্বেগের মধ্যে বিষয়টিতে নজর দিল ভারত।

শুক্রবার সংবাদ মাধ্যম নিউজএক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মন্দাভিয়া জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কোন কোন দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা বেশি তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক যাত্রীদের সরকারি ওয়েবসাইটে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফল আপলোড করতে হবে।

এরপর তারা প্রবেশ করতে পারবেন। থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের (শরীরের তাপমাত্রা মাপা) ভেতর দিয়েও তাদের যেতে হবে। ভারতীয় বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের র‌্যানডমলি কোভিডের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version