১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বা সোমপুর মহাবিহার সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এদিন বিনা টিকেটে পরিদর্শনের সুযোগ পাবে জনসাধারণ।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু।
কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, বিজয় দিবস আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে গৌরবের দিন। এই দিনে জাতি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে এবং দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। তাই এই স্মৃতিবহ দিনে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর নির্দেশনায় এমন সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন এখানে ৮০০ থেকে এক হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে পাহাড়াপুরে। আমরা আশা করছি বিজয় দিবসের দিনে আরো বেশি সংখ্যক দর্শনার্থী আসবে এখানে। এছাড়া এদিন পিঠামেলারও আয়োজন থাকবে বিহার
চত্বরে। চাইলে দর্শনার্থীরা তাদের পছন্দের পিঠা কিনে খেতে পারবেন। আমরা চাই বিজয় দিবেসের ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে
সবাই এখানে আসুক, সেই সাথে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের
তালিকাভুক্ত এই মহাবিহার ঘুরে ঘুরে সবাই উপভোগ করুক।
উল্লেখ্য, ১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। ১৯৮৫
সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। পাহাড়পুরকে
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা হয়। আয়তনে এর সাথে ভারতের নালন্দা
মহাবিহারের তুলনা করা হয়। মোট ৭০.৩১ একর জমির উপর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারটি অবস্থিত।
বিহারটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল। চীন, তিব্বত, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন।
আকর্ষনীয় স্থাপত্য বিশাল আয়তন ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য পাহাড়পুর
বৌদ্ধবিহার আজ বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃত। প্রতিদিন এখানে দেশী-বিদেশী পর্যটক ও সাধারণ মানুষের সমাগম হয়ে থাকে। ঐতিহাসিক এই মহাবিহারটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ বিহার বলে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে।