দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি কমতে থাকলেও দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। দুর্গত এলাকায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া কোনো কোনো এলাকায় চর্মরোগসহ পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে।

চরবাসী করিমন বেগম, হালিমা, মতিন, কোবাজ্জামান, মিঠু মিয়াসহ অনেকের অবস্থা কাহিল। দীর্ঘদিন পানিতে থেকে তাদের হাত-পাসহ সারা শরীরজুড়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। নিরুপায় হয়ে হলুদের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে লাগাচ্ছেন তারা। কিন্তু যন্ত্রণা মেটে না। কাতরাচ্ছেন দিন-রাত। সেইসঙ্গে থাকা খাওয়ার কষ্টতো আছেই। ঘরে কোমর পানির মধ্যে চৌকি ধর্ণার সঙ্গে বেঁধে ঝুলে থেকে শুয়ে বসে রাত কাটান তারা। আছে খাবার পানির স্বল্পতা। দিনের বেলা নৌকা ভাড়া দিয়ে নদীর ওপার থেকে পানি আনতে হয় তাদের।

গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। চারদিকে থৈ থৈ পানি। নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধরা এক চৌকির উপর বসে দিনরাত পার করছেন।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। তারা কয়েকদিন ধরে পানিতে বসবাস করছেন। অনেকেই আবার ঘরবাড়ি ছেড়ে গরু ছাগল নিয়ে চলে গেছেন অন্য জায়গায়।

গাইবান্ধার চার উপজেলা সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার বেশ কয়েকদিন যাবৎ পানিবন্দি কামারজানি, মোল্লারচর, কাপাসিয়া, হরিপুর, ফজলুপুর, উড়িয়া, রতনপুর, ফুলছড়ি, গজারিয়া, এ্যাড়েন্ডাবাড়ি, কঞ্জিপাড়া, শ্রীপুর, তারাপুর, বেলকাসহ ২৫টি ইউনিয়ন। চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের অবস্থা শোচনীয়।

কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের মানুষের অবস্থা কাহিল। তাদের অনেকের ঘরে খাবার আছে। কিন্তু রান্না করার মতো জায়গা নাই। তাই পানিতে নেমে কলার ভেলায় চুলা রেখে তাতে রান্না করছেন। এক বেলার রান্না খাবার খাচ্ছেন তিন বেলায়। খাবার পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি চুলা জ্বালানোর মতো উঁচু স্থান নেই । সে কারনে পানির মধ্যে চৌকি উঁচু করে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে। মলমূত্র ত্যাগের মতো কোন জায়গা নেই । আশ্রয় কেন্দ্র খোলা আছে ৬০টি কিন্তু ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে কিছু মানুষের জায়গা হয়েছে। বিপদে আছেন তাদের একমাত্র সম্বল গবাদী পশু নিয়ে। জায়গা না পেয়ে অনেকেই শুধু গবাদী পশু নিয়ে নদীর অপর প্রান্তে চলে গেছেন। সরকারীভাবে মেডিকেল টিম গঠনের কথা শোনা গেলেও দুর্গত এলাকায় দেখা যায়নি কাউকে।

খারজানির চরের করিমন বেগম বলেন, আমরা কিভাবে আছি, কি খাই, তার খোঁজ নিতে আসেনি কেউ। ঘর থেকে বের হতে পারিনা। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে ঘরের সামনে বসে থাকি আশায় আশায়। কিন্তু মেলেনা কিছুই।

পানিতে থাকতে থাকতে করিমনের হাতে পায়ে ঘা হয়েছে। রাত দিন চুলকায়। পায়ে কেরোসিন তেলে হলুদ মেখে কষ্ট নিবারণের চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, রাতে ঘুম নেই, কখন ছোট ছেলেটা পানিতে ভেসে যায় সেই ভয়ে।

জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম ফয়েজ উদ্দিন ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য ১শ’ ২৫ টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version