মো. মাসুম বিল্লাহ : জাককানইবি প্রতিনিধি: মহানবী হযরত মুহম্মদকে (সা.) নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে নিন্দা জানানোর দাবিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা । শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় । এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শত শত শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ চত্বরে সমবেত হয়ে ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ ‘ইসলামের শত্রুরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ‘বিশ্বনবীর অপমান, সইবে না মুসলমান’ ‘মোদির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সারা পৃথিবীর মানুষ আজ জেগে উঠেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে মরক্কো পর্যন্ত সমস্ত মানুষ আজ রাস্তায়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, রাসূল (সা:) কে নিয়ে কেউ কিছু করলে সে নির্বংশ হয়ে যাবে। আমরা আমাদের সরকারকে স্পষ্টভাবে তাদের অবস্থান জানান দিতে বলেছি। ৯০% মুসলমানের দেশের সরকার অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিন। বিশ্ব মুসলিমদের হৃদয়ের স্পন্দন মহানবী (সা.) কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য কোনো মুসলমানই মেনে নিতে পারে না। এসময় তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর দাবি জানান । শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ধর্মীয় অপবাদ ছডিয়ে ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তাদের এমন কর্মকাণ্ড গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রসায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের স্পষ্ট পায়তারা। এছাড়া তারা সম্প্রীতির বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠিকে উসকে দিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পারিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়। আমাদের সর্বোচ্চ প্রতিবাদ হতে পারে ভারতের সব পণ্য বর্জন করা। ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখা বর্জন করুন।’ প্রসঙ্গত, এই বিতর্কের মূলে রয়েছেন নূপুর শর্মা, যিনি ছিলেন ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির মুখপাত্র। গত মাসে এক টেলিভিশন বিতর্কে তিনি নবীকে নিয়ে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। তার সেই বক্তব্যের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির দিল্লি শাখার মিডিয়া প্রধান নভিন কুমার জিন্দালও বিতর্কিত এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে টুইটারে উসকানিমূলক পোস্ট দেন। তাদের এসব মন্তব্যকে ভারতে বিদ্যমান তীব্র ধর্মীয় বিভাজনের প্রতিফলন বলছেন সমালোচকরা। ইতিমধ্যে কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব থেকে শুরু করে মুসলিম দেশগুলো একে একে ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।