তাসলিমুল হাসান সিয়াম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: বাহাদুরাবাদ-বালাসী রুটে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া লঞ্চ সার্ভিস দুই মাসের মাথায় বন্ধ হয়েছে গেছে। নাব্য সংকটের কারণে শনিবার (০৭ মে) সকালে দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবোচরে আটকে যায় এমভি মোহাব্বত ও রিভারস্টার নামে দুটি লঞ্চ। জানা গেছে, শনিবার সকালে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী ঘাট থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ব্রহ্মপুত্র নদে এমভি মোহাব্বত নামে একটি লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যায়। পরে নৌকা ও স্পিডবোটযোগে লঞ্চে আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিভারস্টার নামে আরেকটি লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যায়। বর্তমানে এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মেহেদী হাসান জানান, নাব্য সংকটের কারণে প্রায়ই এই রুটে লঞ্চ বালুতে আটকে যায়। এবার এমনভাবে লঞ্চ দুটি ডুবোচরে আটকে গেছে ড্রেজিং ছাড়া কোনোভাবেই ছাড়ানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। ড্রেজিং ব্যবস্থা নিয়মিত চালু থাকলে এই রুটে লঞ্চ চলাচল সম্ভব। আশরাফুল আলম নামে লঞ্চের এক যাত্রী জানান, যানজট থেকে বাঁচতে ও সময় কম লাগার জন্য বালাসী-বাহাদুরাবাদ ঘাট হয়ে ঢাকা যাচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু দূর যেতেই লঞ্চটি ডুবোচরে আটকে যায়। যানজট থেকে বাঁচতে যদি এমন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, তাহলে তো লঞ্চ সার্ভিসের দরকার নেই। মঞ্জু মিয়া নামে আরেক যাত্রী বলেন, শুনেছি এই রুট খননের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কি খনন হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে। যেখানে লঞ্চ চলাচল করতে পারে না, ফেরি তো সেখানে স্বপ্নের মতো। শুধু শুধু সরকারের টাকাগুলো নষ্ট করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর চাপ কমানো এবং উত্তরবঙ্গের আট জেলার সঙ্গে যাতায়াত সহজ করতে বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌরুটে পরীক্ষামূলকভাবে ৮ মার্চ দুটি লঞ্চ সার্ভিসের উদ্ধোধন করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে একনেকের এক সভায় বালাসী থেকে বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত নৌরুটটি আবারও চালু করে ফেরিঘাট নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটির প্রথম ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। পরবর্তীতে দুবার সংশোধন করে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা খরচ করে বাস টার্মিনাল, টোল আদায় বুথ, পুলিশ ব্যারাক, ফায়ার সার্ভিস ও আনছার ব্যারাকসহ বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর কারিগরি কমিটি হঠাৎ করে নাব্য সংকট ও ২৬ কিলোমিটার বিশাল দূরত্বের নৌপথসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে নৌ রুটটি চলাচলে অনুপযোগী বলে প্রতিবেদন দেয়।