সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওড়ের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা, নেত্রকোনার কালিয়াজুরি, মদন, কিশোগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন উপজেলার হাজারো কৃষকের ফসল ডুবছে।
আজ রবিবার ভোরে দাড়াইন নদীর পানির চাপে বাঁধটি ভেঙে হাওড়ে পানি প্রবেশ করে।
এ বিষয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেব বলেন, হাওড়ের ৪ হাজার ২৭০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। পুরো হাওড়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আগে আরও কিছু জমির ধান কাটা হয়ে যাবে। ২ থেকে ১ ভাগ জমির ধান নষ্ট হতে পারে। শনিবার রাত ১১ টায় কালবৈশাখী হচ্ছিল। ওই সময় তদারকিতে কেউ না থাকায় বাঁধ ভেঙেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীরা জানান, রবিবার ভোরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিআইসি নির্মিত বাঁধটিতে ফাটল দেখা দেয়। পরে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। বাঁধ ভাঙার এ দৃশ্য দেখে হাজারো কৃষক তাঁদের অবশিষ্ট জমির ধান কাটতে হাওরে নামেন।
কৃষকরা জানান, অকৃষক কৃপেন্দ্র দাসকে সভাপতি করে ২২ লাখ টাকার এই প্রকল্প দেওয়া হয়। পিআইসি সভাপতি কৃপেন্দ্র সিলেটে অবস্থান করেন। তিনি কৃষকও নন। তাই বাঁধের কাজে নানা দুর্বলতা ছিল। এই দুর্বলতার কারণেই বাঁধ ভেঙে হাওরের কাটার বাকি অবশিষ্ট জমির ধান তলিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তারা।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের শাল্লা উপজেলা সভাপতি তরুণ কান্তি দাস বলেন, রবিবার ভোরে মাউতির বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকছে। বাঁধ যেভাবে ভেঙেছে, এর আগে এভারে কোনদিন বাঁধ ভাঙেনি। শনিবার সন্ধ্যায়ও কিছু লোক পিআইসির সভাপতি কৃপেন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাসকে বাঁধে বুরুঙ্গার কথা জানান। কিন্তু তারা আমলে নেন নি। রাতে বাঁধেও ছিলেন না এরা।
তিনি আরও বলেন, রবিবার ভোরে যখন বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু হয়, তখনও চিৎকার দিলে মাইকে প্রচার দিলে বাঁধ ঠেকানো যেত।
তার মতে, হাওরের ৩০ ভাগ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে কৃষকের ৫০ ভাগ ক্ষতি হবে। কারণ তারা ধান কেটে ক্ষেতেই রেখেছিলেন। এই ধান তুলে আনার সময় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে হাজারো কৃষককে। দুই দিনে হাওরে গলাসমান পানি হবে। এরপর অসহায় হয়ে যাবেন তারা।
এর আগে উজানের ঢলে শালদীঘা হাওড়ের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৩০ হেক্টর জমির ফসল। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর, বংশীকুণ্ডা, বাসাউড়া, হাতপাঠন, নয়াবন্দ, সানুয়া, মাকড়দি, কাউহানি, বীরসিংহপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক কৃষকের জমি তলিয়ে যায়।