ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। যদিও এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক এজেন্ডা খুব বেশি চোখে পড়েনি। এই নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো। তবে এবারের নির্বাচনেও জয়লাভের বিষয়ে বেশ আশাবাদী তিনি।
ডানপন্থি নেতা মেরি লে পেন বেশ উদ্যমের সঙ্গেই নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে। প্রথম দফার নির্বাচনে জয়ী দুই প্রার্থী আগামী ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। ২০১৭ সালেও একই পদ্ধতিতে দেশটিতে ভোট হয়েছিল। এরপর সে সময় ভূমিধস জয় ছিনিয়ে আনেন ম্যাক্রো। দেশটির চার কোটি ৮৭ লাখ মানুষ ভোটে অংশ নিচ্ছেন।
দেশটিতে সমাজতন্ত্রী এবং মধ্য-ডানপন্থিরা ১৯৫০-এর দশক থেকে ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই পুরনো মডেল এখন ভেঙ্গে গেছে। ক্ষমতাসীন সমাজতন্ত্রী দলের জনপ্রিয়তা হারানো এবং রিপাবলিকান দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ফলে কখনোই ফরাসি পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব না করা প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোর জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী হওয়ার পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে।
মধ্যপন্থি ম্যাক্রো অথবা উগ্র ডানপন্থি মেরি লে পেন, যেই নির্বাচিত হোক না কেন ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের একটি মূল এজেন্ডা থাকবে পরিবর্তন আনা।
উগ্র-ডানপন্থিরা এরই মধ্যে আটটি শহরের ক্ষমতায় আছে এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তাদের ২০ জন সদস্য রয়েছে- যদিও মূলধারার রাজনীতি তাদের সবসময়ই অবজ্ঞা করেছে।
ভোটাররা ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ গন্তব্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) দেশটির বর্তমান অবস্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি তারা ইমানুয়েল ম্যাক্রোকে ভোট দেন, তাহলে তারা ইউরোপপন্থি এবং ইইউয়ের সংস্কারের পক্ষে থাকা একজন প্রার্থীকে সমর্থন করবেন।
যদি তারা মেরি লে পেনকে ভোট দেন, তাহলে তারা সম্পূর্ণ বিপরীত কিছু চাইছেন। কেননা পেনের অবস্থান ইইউয়ের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি টুইট বার্তার মাধ্যমে পেন বলেছিলেন, আমি ইইউয়ের সঙ্গে আমাদের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ৬ মাস আলোচনা করব। এরপর ফরাসি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন।
গত মার্চ মাসের এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ১০ জনের মধ্যে সাতজন ফরাসি নাগরিক ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে। কিন্তু প্রথম ধাপে ম্যাক্রোই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে কথা বলেছেন।
জনমত জরিপে দেখা যায়, বড় ধরণের জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ম্যাক্রো। দ্বিতীয় ধাপে তার সমর্থন প্রায় ৬০ শতাংশ। যদিও গত কয়েক দিনে তার অবস্থান কিছুটা পিছিয়েছে। এছাড়া ভোটারের উপস্থিতি কম হলে হয়তো পেনের জন্য একটি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ২০১১ সাল থেকে তিনি নিজের দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। মূলত এর আগে সেই দলের প্রধান ছিলেন তার বাবা।