দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবসে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েও দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা! এতে আহত হয়ে অনেককে চিকিৎসা নিতে হয়েছে হাসপাতালে। অধিকাংশ স্থানে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠন। কোথাও আবার দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন মেয়র ও ইউএনও। সংঘর্ষের জেরে বরগুনার পাথরঘাটায় ফুল দেওয়ার আগেই ভেঙে ফেলা হয়েছে শহীদ মিনার। তবে এসব নেতিবাচক খবরের মধ্যেও পাথরঘাটায় কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী বেহেরুজ। মুখে ভাষা না থাকলেও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছরই শহীদ মিনার তৈরি করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফুল ছিটান মধ্যবয়স্ক বেহেরুজ।

আমাদের সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের খবর-

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের হাতিহাতি : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে একাধিকবার হাতিহাতিতে জড়িয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় মেজাজ হারিয়ে এক কর্মীকে থাপ্পড় মারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১টার দিকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসে ছাত্রলীগ। এ সময় সেখানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ছিলেন। পুষ্পস্তবক নিয়ে বেদির সামনে এলে প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কির সৃষ্টি হয়। অর্পণের সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পুষ্পস্তবকটি ভেফু দুই টুকরো হয়ে যায়। এ সময় সাদা পাঞ্জাবি পরা একজনকে থাপ্পড় মারতে দেখা যায় সনজিতকে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, থাপ্পড় মারার পর ওই ব্যক্তি পেছনের দিকে চলে যান। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে চলে যাওয়ার সময় আরও একজনের গলায় হাত দিয়ে সরিয়ে দেন সনজিত। এদিকে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল শাখাগুলোর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় রীতিমতো বাঁশের লাঠি নিয়ে মারামারি শুরু হয়। বেদির সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সেখানে জগন্নাথ হল ও শহীদুল্লাহ হলের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। এ সময় ব্যানার বহনে ব্যবহৃত বাঁশের লাঠি নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায় তাদের। এর আগে শহীদ মিনারের বেদির প্রবেশমুখে হাতিহাতিতে জড়ান বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। থাপ্পড় দেওয়ার বিষয়টি জানতে সনজিত চন্দ্র দাসকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিজয় একাত্তর হলের সভাপতি সজীবুর রহমান সজীব বলেন, একাধিক হল একসঙ্গে ফুল দিতে যাওয়ায় বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। তবে তা মারামারির পর্যায়ে যায়নি, চিৎকার-চেঁচামেচি হয়েছে।

পাবনায় দ্বন্দ্বে জড়ালেন মেয়র-ইউএনও : কার নেতৃত্বে ভাষা শহীদদের প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে এ নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসাহক মালিথা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস দ্বন্দ্বে জড়ান। একুশের প্রথম প্রহরে ঈশ্বরদী বাস টার্মিনালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১২টা ১ মিনিটে পৌর মেয়রের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে আপত্তি জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস। ক্ষোভে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অর্পণ শেষ হলে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মেয়র ইসাহক মালিথা বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিভুক্ত পৌর মেয়রের অবস্থান ২৫ নম্বরের প্রথমে। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান। এখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কোনো অবস্থান নেই। ইউএনও ইমরুল কায়েস বলেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত বিধায় আমরা রাষ্ট্রের বা রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি। উপজেলা পর্যায়ে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে সব দিবসের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি শুধু রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে আসন বিন্যাস বা বসার ক্ষেত্রে।

চট্টগ্রামে সংঘর্ষে জড়াল ছাত্রলীগ : দীর্ঘদিন ধরেই কমিটি নিয়ে বিরোধকে ঘিরে পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন, মিছিলসহ নানা ইস্যুতে মাঠে ছিল ছাত্রলীগ। এবার ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে চট্টগ্রাম সরকারি মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। গতকাল দুপুরে কলেজের ভিতরে হওয়া সংঘর্ষে আহত হয়েছেন প্রায় ১০ জন। দ্রুত পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান।

পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ : শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। চারজনকে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল সকালে পাকুন্দিয়া সদরের শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রেণু অভিযোগ করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছেন। সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা হাজারো মানুষ নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়েছি। মারামারি করার জন্য নয়।

রায়পুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। ১৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল  সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ সড়কের ডাকবাংলোর সামনের প্রধান সড়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে রায়পুর শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন,  মিছিল ও শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

পাথরঘাটায় ভেঙে ফেলা হলো শহীদ মিনার : বরগুনার পাথরঘাটায় মহান একুশের রাতে ফুল দেওয়ার আগেই অস্থায়ী শহীদ মিনারটি কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে। একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে শহীদ মিনারটি ভাঙা দেখেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় সব মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটেছে পাথরঘাটা উপজেলার ১ নম্বর রায়হানপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড জামিরতলা এলাকায়। রায়হানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ মুরাদ বলেন, রবিবার সন্ধ্যার পর জামিরতলা গ্রামের শহিদুলের বাড়ি থেকে ফুল আনা নিয়ে শহীদ মিনার আয়োজকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা শহীদ মিটার ভাঙা দেখতে পান। যাদের সঙ্গে ফুল নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে তারাই এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। এ বিষয় অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মিথ্যা। কীভাবে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে ভাষা শহীদদের অশ্রদ্ধা করি? আমার সঙ্গে মুবিন, রিফাত, সালমানের পূর্ব বিরোধের কারণে এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ বিএনপির : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী তা ব চালিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আহত করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী সরকার ‘জয়বাংলা-ফ্যাসিবাদ’ প্রতিষ্ঠায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। ভাষা শহীদ দিবসেও তাদের নারকীয় তা ব অব্যাহত আছে। আওয়ামী সহিংসতার কীর্তি পত্রিকার প্রথম পাতাজুড়ে প্রকাশ পেলেও নিশিরাতের সরকার ভ্রুক্ষেপহীন। ‘ননসেন্স বক্তৃতায়’ অপরাজেয় আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতাদের আশকারাতেই জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নামধারী রক্তপিপাসু দল সৃষ্টি করা হয়েছে। গোটা জাতিকে নিষ্প্রাণ নিস্তেজ করার জন্যই এসব দানবদের তৈরি করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version