দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: আয়েশা সিদ্দিকা (৩৮) একজন দিনমজুর সাকা মিয়ার স্ত্রী। পাঁচশতকের এক বসতভিটা ছাড়া তেমন কোনো সম্পদ নেই বললেই চলে। স্বামীর আয়ে কোনোমতে চলে এক মেয়ে ও ছেলে নিয়ে তার সংসার। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগাতেই হিমশিম অবস্থা তাদের।

আয়েশা সিদ্দিকার মতো এমন গল্প ওই এলাকার অনেক নারীরই। এসব নারীদের দুদর্শা লাঘব এবং স্বাবলম্বী করতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড। সরকারের এমন উদ্যোগে কয়েক বছরে রেশম চাষে বদলে দিয়েছে অবহেলিত এ জনপদের নারীদের জীবনধারা মান। কোনো খরচ ছাড়াই চার বছর ধরে রেশম পোকা পালন করছেন ফতেহখাঁয়ের প্রায় ৪৫০ জন নারী। পোকা থেকে তৈরি করছেন রেশম গুটি। অভাবের সংসারে আসছে বাড়তি আয়।

আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, গুটি বিক্রি করে বার্ষিক ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। অভাব আর সংসারে হানা দিতে পারে না। সুন্দরগঞ্জ রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (সম্প্রসারণ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, ২০১৮ সালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলায় রেশম পোকার চাষ শুরু হয়। এসব উপজেলার প্রায় ৪৫০ জন নারী এই পোকা পালনে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন।

রেশম পোকার খাদ্য হিসেবে তিনটি উপজেলায় প্রায় ৩৬ হাজার তুঁত গাছ লাগানো হয়। তুঁত গাছের ডাল রোপণের একবছর পর এর পাতা সংগ্রহ করা হয়। রেশম পোকা তুঁত পাতা ছাড়া অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করেনা। রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও ঝিনাইদহ থেকে রেশম পোকার ডিম গাইবান্ধায় নিয়ে আসা হয়। পরে এসব ডিম বিনামূল্যে নারীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এছাড়া পোকা পালনে তাদেরকে বিনামূল্যে ১৪ হাত দৈর্ঘ্য ও ৯ হাত প্রস্থের একটি টিনশেড ঘরও তৈরি করে দেয়া হয়। এই ঘরে তারা রেশম পোকা পালন করেন।

পোকা থেকে উৎপাদিত গুটি লালমনিরহাট, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, ঝিনাইদহসহ মোট ১২টি ক্রয়কেন্দ্রে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব ক্রয়কেন্দ্রে রেশম গুটি থেকে সুতা তৈরি করা হয়। পরে সেই সুতা পাঠানো হয় রাজশাহী ও ঠাকুরগাঁওয়ের কারখানায়। ওইসব কারখানায় টুপিস, থ্রিপিস, ওড়না, শাড়ি, চাদরসহ বিভিন্ন পোশাক তৈরি হয়। পরে সেইসব পোশাক বিক্রি করা হয় দেশব্যাপী।

ফতেহখাঁ গ্রামের আরেক গৃহবধু মিলি বেগম (৩২) জানান, মা মেয়ে মিলে মুদি দোকান চালান। দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালাতে বেশ কষ্টই হচ্ছিলো তাদের। মুলধন ছাড়া শুধু শ্রম দিয়েই দুইবছর ধরে রেশম পোকা পালন শুরু করেন। এ থেকে প্রতিবছর ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি আয় করছেন।

এদিকে, এসব গাছ পরিচর্যা করে আরও ২৪ নারীর কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এসব নারী প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামের বন্দনা রানী (৫০) বলেন, তুঁত গাছের পরিচর্যা করে মাসে মাসে টাকা পাচ্ছেন। ফলে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে। আবার তুঁত গাছের ডাল রান্নায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করায় এর ব্যয়ও কমেছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version