সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজশাহীতে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের নামে ১৯৮ মামলা হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মামলাগুলো হয়। এসব মামলায় সাড়ে চার হাজারের বেশি আসামি। কিন্তু সাত বছরে একটি মামলার বিচারকাজও শেষ হয়নি। তবে এবার মামলাগুলো গতি পাচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম জানান, সাক্ষী হাজির করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে মামলাগুলোর বিচারকাজ যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সেজন্য পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষীদের হাজির করতে তারা চেষ্টা করছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজশাহীতে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ১৯৮টি মামলার মধ্যে ১৩টির চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ১৮৫টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। এ মামলাগুলোতে এক হাজার ৮২৩ জন আসামি গ্রেফতার হন। তবে গ্রেফতার হওয়া আসামির কারও এখন পর্যন্ত সাজা হয়নি। রাজশাহী মহানগর ও জেলা পুলিশ সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত রাজশাহীতে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৯৮টি মামলার চার্জশিটে (অভিযোগপত্র) চার হাজার ৫০৭ জনের নাম উল্লেখ ছিল। এর মধ্যে রাজশাহী মহানগরীতে ১৫২টি মামলায় তিন হাজার ৩৪৪ জন আসামির নাম ছিল চার্জশিটে। বাকি ৪৬টি মামলা হয়েছে রাজশাহী জেলায়। যেখানে চার্জশিটভুক্ত আসামির সংখ্যা এক হাজার ১৬৩ জন। রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) ও মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরীতে রাজনৈতিক সহিংসতার ১৫২টি মামলার মধ্যে ৯টির চূড়ান্ত রিপোর্ট এবং চারটি মামলা খালাস হয়েছে। বাকি মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।’ রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে রাজশাহী জেলায় বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সহিংসতায় দায়েরকৃত ১৮টি মামলার অভিযোগপত্রে আসামির সংখ্যা ছিল ৫৭৪ জন। এসব মামলায় ১৪ জন এজাহারভুক্তসহ ৪১ জন আসামি গ্রেফতার হয়। মামলাগুলোর মধ্যে চারটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো আসামির সাজা হয়নি। মামলাগুলোর মধ্যে চারটি মামলা খালাস হয়েছে। বর্তমানে ২০১৪ সালের ১০টি মামলা আদালতে বিচারাধীন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘রাজশাহী জেলায় রাজনৈতিক সহিংসতার দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে চারটির চূড়ান্ত রিপোর্ট এবং পাঁচটি মামলা খালাস হয়েছে। বাকি মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে বিচারধীন।’ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেন জানান, পুলিশ অভিযোগপত্র দিলে আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়। যেসব মামলার অভিযোগপত্র পুলিশ দিয়েছে সেগুলোর কার্যক্রম চলছে। তবে সাক্ষী হাজির না হওয়ায় অনেক মামলার বিচারকাজ এগিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সাক্ষীরা যাতে আসেন সেজন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।