জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃউত্তর-পূর্ব সিলেটে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুদীর্ঘ চার দশকের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহমী হেড স্যার স্মরণে “স্মৃতির পিঞ্জরে” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে হেডস্যার আব্দুর রহীম স্মৃতি সংসদ আয়োজিত স্থানীয় দরবস্ত ইউপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন,হেড স্যারের সুযোগ্য সন্তান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশিক আনোয়ার বাহার। প্রাক্তন ছাত্র লেখক,গবেষক ও পরিবেশ কর্মী আব্দুল হাই আল হাদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে লিখিত স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ‘স্মৃতির পিঞ্জরে’ এর সম্পাদক,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক সাংবাদিক এহসানুল হক জসীম।
সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসাইন আহমদ (বিএসসি স্যার) ও সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক মৌলভী ইনসান আলী এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানে ‘স্মৃতির পিঞ্জরে’ এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে হেড স্যার আব্দুর রহীম ও স্মৃতিগ্রন্থের উপর আলোচনা রাখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আতিউল্লাহ, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ,জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব মো. জয়নাল আবেদীন,স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমদ,গোয়াইনঘাট সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রিন্সিপাল ফজলুল হক,সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সাব্বির আহমদ, কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক রেহান উদ্দিন,ইমরান আহমদ সরকারী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, ব্যাংকার সাইফুল ইসলাম,সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক আলোকিত সিলেটের নির্বাহী সম্পাদক গোলজার আহমদ হেলাল,দৈনিক জৈন্তা বার্তা সম্পাদক ফারুক আহমদ, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান উদ্দিন, জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসন, যুগ্ম আহবায়ক কুতুব উদ্দিন, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিনিয়র সাংবাদিক এম এ রহীম, কবি সরওয়ার ফারুকী, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলাম,ব্যাংকার ফয়জুল জালাল ফয়সল,দরবস্ত বাজারের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী নুরুল আমীন,জৈন্তাপুর অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এম.রুহেল, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো. হানিফ, যুগ্ম সম্পাদক রেজওয়ান করিম সাব্বির প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন,বৃহত্তর জৈন্তার শিক্ষা বিস্তার ও উন্নয়নের অগ্রদূত হলেন আব্দুর রহিম হেড স্যার।তাঁর সুনিপূণ দক্ষতা,নিরলস পরিশ্রম ও সাহসী পদক্ষেপের কারণেই সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয় সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।তাঁর বদান্যতায় এতদঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে প্রশ্নাতীত ভাবে।গেল শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে একুশ শতকের প্রথম দশক পর্যন্ত তিনি একটি জাগরণ তৈরী করেছিলেন।তাঁর এই জাগরণই বিশাল মহীরুহে পরিণত করেছে তাঁকে।হেড স্যার আব্দুর রহিমের শিক্ষা সংগ্রাম যুগ যুগ ধরে নয়া প্রজন্ম স্মরণ রাখবে।তিনি ছিলেন বৃহত্তর জৈন্তার শিক্ষার প্রাণপুরুষ,এক আলোকবর্তিকা।
প্রফেসর ড. আতিউল্লাহ বলেন, শিক্ষকের কোন মৃত্যু নেই।শিক্ষক বেঁচে থাকেন শিক্ষার্থীর মাঝে চিরকাল।শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের জীবন ও কর্মকে ধারণ করে তাঁকে আজীবন বাঁচিয়ে রাখে যেমন,তেমনি এর মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন পথ ও রচনা করে।তিনি বলেন,শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে যারা ব্রত হিসেবে নেন, তারা প্রকৃত অর্থে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে অভিহিত হন। হেড স্যার আব্দুর রহীমের কাছে শিক্ষকতা কেবলই একটি পেশা কিংবা চাকুরী ছিল না, তাঁর কাছে এটা ছিল ব্রত এবং জৈন্তা অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার হাতিয়ার। শিক্ষকতাকে তিনি শিল্পে পরিণত করেছিলেন বলে মানুষ গড়ার কারিগরই শুধু হয়ে উঠেননি; তিনি হয়ে উঠেছিলেন বৃহত্তর জৈন্তার শিক্ষার বাতিঘর।
হেডস্যারের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের সহকর্মী হোসাইন আহমদ বিএসসি স্যার বলেন, সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ে আমরা সকল শিক্ষক টিমওয়ার্ক করেছি। আমাদের টিমের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক মরহুম আব্দুর রহীম। তিনি তাঁর কর্মগুণে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন সকলের মাঝে।