সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন,শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। এটি দেশের সেরা পাবলিক ইউনিভার্সিটির একটি। তিনি বলেন, সিলেট নগরবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্হিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন।
শাবিপ্রবির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যথেষ্ট হয়েছে, আর না।নিরপেক্ষ একটি তদন্ত কমিটি করে অতি দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানান।তিনি বলেন,এ প্রতিষ্ঠান আমাদের গর্ব। শাবির শিক্ষার মান অনেক উন্নত, এটা যেন ব্যহত না হয়।সেদিকে খেয়াল রাখা খুব জরুরী।
বুধবার রাতে নগরীর জিন্দাবাজারে প্রবাসী কমিউনিটি নেতা নজরুল ইসলামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ইয়াং প্রফেশনাল টীম, বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান,প্রবাসী কমিউনিটি নেতা,বৃহত্তর বাগলা প্রবাসী এসোসিয়েশন এর সভাপতি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ ইউ এ ই’র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম এর সংবর্ধনা ও গুনীজন সম্মাণনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রবাসী নেতা নজরুল ইসলাম। ইয়াং প্রফেশনাল টীমের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুবেল চৌধুরীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি রুহিন আহমদ খাঁন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদী(কয়েস লোদী), সিলেট প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আবদুল কাদের তাপাদার,সিলেট চেম্বারের পরিচালক যুবলীগ নেতা মুশফিক জায়গিরদার,সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সিলেটের ডাকের চীফ রিপোর্টার মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক আলোকিত সিলেটের নির্বাহী সম্পাদক গোলজার আহমদ হেলাল, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য ও সিলেট সান’র সম্পাদক ফয়সল আহমদ বাবলু, গোলাপগঞ্জের বাদেপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক জাহিদ হোসাইন, গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল আহাদ,সিলেট লেখিকা সংঘের সাধারণ সম্পাদক কবি ও লেখক ইশরাক জাহান জেলী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাক এর সিলেট ব্যুরো প্রধান হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী,বৈদেশিক সাংবাদিক সমিতির নেতা ও ডেইলি আমার কাগজের সিলেট ব্যুরো প্রধান খালেদ আহমদ, দৈনিক জৈন্তা বার্তার সম্পাদক ফারুক আহমদ,ছাতক প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম হিরণ,সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য তাসলিমা খানম বীথি।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সিলেটের ডাকের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার নুর আহমদ, দৈনিক আলোকিত সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার এম এ হান্নান, সিলেটের খবরের স্টাফ রিপোর্টার কবি আব্দুল কাদির জীবন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস এর সিলেট প্রতিনিধি ডি এইচ মান্না,ওবায়েদুল্লাহ বিন এফ রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সিলেট শহর, গোলাপগঞ্জ, বড়লেখা ও ছাতকসহ বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শীঘ্রই সিলেটে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির শাখা খোলা হবে। তিনি সিলেটকে এগিয়ে নিতে শিক্ষায় সিলেটের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে কাজ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।তিনি বলেন, শাবিপ্রবি’র ঘটনায় আমরা ব্যথিত। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলকে এ অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মেয়র বলেন, এই কিছুদিন আগে আমি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের লক্ষে ৯টি প্রকল্পের ফাইল মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। শীঘ্রই আরো ৪/৫টি দেব। উচ্চ পর্যায়ের আমলার অনেকেই বলেন, আপনি এত প্রস্তাবনা কিভাবে প্রস্তুত করেন।
মেয়র আরিফ বলেন, আমি তো সামনের দিনে সিলেটের অন্ধকার দেখছি। আমাদের গর্বিত জাতীয় নেতা হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী, এম সাইফুর রহমান, আব্দুস সামাদ আজাদ, শাহ এস এম কিবরিয়া, সুরঞ্জিত সেন গুপ্তরা চলে গেছেন। আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এখনো আছেন। এদের মতো লোকের প্রয়োজন ও অভাববোধ করছি আমরা। সিলেটের উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে এতদঞ্চলের নতুন প্রজন্মকে সিভিল সার্ভিস ও সেনাবাহিনীতে রিক্রুট বাড়াতে হবে।
মেয়র আরিফ বলেন, সিলেটের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে অনেক কথা রয়েছে। বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে সাধারণ জনগনের ভোগান্তির অনেক খবর আমাদের কাছে আসে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, উনারা সেবা দিয়ে কালকেই জান্নাতে চলে যাচ্ছেন। অথচ তাদেরই হাসপাতালগুলোতে সিজারের নামে যে অমানবিকতা চলছে, তা খুব দু:খজনক।সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শীঘ্রই অত্যাধুনিক মা ও শিশু হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হলে মা ও শিশুরা উন্নতমানের সেবা পাবে।
মেয়র বলেন, অনেক উন্নয়ন মুলক কাজ করা যাবে যদি শুধু মাত্র প্রবাসীরা এগিয়ে আসে।প্রবাসীরা বাংলাদেশের বড় সম্পদ। অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দেয় প্রবাসী জনগণ। সেই সাথে সিলেটের স্থানীয় ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানও এক্ষেত্রে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে। প্রবাসীরা আমাদের জনগণকে অনেক সহায়তা করে থাকেন। স্থায়ী প্রতিষ্ঠান গড়তে ভূমিকা রাখলে জনগণ স্থায়ীভাবে এর সুফলভোগ করবে।
মেয়র বলেন, আমরা যে কাজগুলো করছি এর শতভাগ উপকার ভোগী সাধারণ জনগণ। তাই প্রবাসী ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রবাসীদের ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অলসটাকা গুলো কার্যকর খাতে ব্যয় করতে তিনি অনুরোধ জানান।