দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

ফরহাদ খোন্দকার, নিজস্ব প্রতিবেদক:

যৌবনে যে মানুষটি স্ত্রীর সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সেই মানুষটি বৃদ্ধ বয়সে ফেনীর সামাজিক সংগঠন “সহায়”এর তত্ত্বাবধানে অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন। মাঝের ২৬ টি বছর কেটেছে অনাদর অবহেলা আর বঞ্চনায়। কখনো বা দিন মজুরের কাজ, কখনো বা লেবার, কখনো বা ভিক্ষাবৃত্তি।এভাবে জীবন সায়হ্নে এসে পড়া চাঁনমিয়া অবশেষে যখন বার্ধক্যের ভারে নুয়ে পড়ছিলেন তখন ফেনীর সামাজিক সংগঠন সহায়’এর কোলে মাথা গুঁজে প্রাণ রক্ষা পায়।
চাঁন মিয়ার এই বাস্তব কাহিনীটি গল্পকেও হার মানিয়েছে।

পুরো নাম মুকমুল ইসলাম চাঁন মিয়া ১৯৯৬ সালে
স্ত্রীর সাথে অভিমান করে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। এরপর বাস স্টেশন, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন স্কুল বারান্দায় তার রাত কাটে। আধপেটা, আধাবেলা খেয়ে না খেয়ে কোন রকম জীবনের ২৬ বছর চালিয়ে দেন। অভিমানের কাছে হার না মানা চাঁনমিয়া অবশেষে রোগে শোকে আক্রান্ত বার্ধক্যের কাছে হার মেনে বাড়ি ফিরতে হলো।
গত ১০ ডিসেম্বর ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে চানমিয়াকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা পুলিশের সহযোগিতায় নিয়ে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সেখানে ফেনীর সামাজিক সংগঠন “সহায়”এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন ।একই সাথে তার পরিচর্যা কাজ শুরু হয় । পাশাপাশি তার পরিচয় শনাক্তের জন্য কাজ করেন সহায়। এজন্য চাঁনমিয়ার ছবি এবং তথ্য চেয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে এবং শেরপুরের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়।

অভিমানি চাঁনমিয়ার ছিলনা কোন জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র।সেই কারনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার কোন পরিচয় শনাক্ত করতে পারে নি ।

গত ১৩ ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ফেইসবুকের একটি পোস্ট নজরে আসে চাঁন মিয়ার স্বজনদের। তখন সহায়ের টিমের সাথে যোগাযোগ করেন স্বজনরা। ভিডিও কলের মাধ্যমে স্বজনরা চাঁন মিয়ার পরিচয় শনাক্ত করে। বার্ধক্যজনিত নানান রোগে আক্রান্ত চাঁনমিয়া ফেনী জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ একমাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন।

১৫ জানুয়ারি শনিবার দীর্ঘ ২৬ বছর পর ফেনীর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসাধীন থাকার পর তার পরিবারের কাছে ফিরলেন।শনিবার সকালে তার পরিবারের লোকজন এসে তাকে নিয়ে যায়।

চাঁনমিয়ার ছোট ভাই ব্যবসায়ী শাজাহান জানায় তার ভাই মকুমুল ইসলাম চান মিয়া তাদের তিন ভাইয়ের
মধ্যে সবার বড়। পিতার নাম মহিদুল ইসলাম এবং মাতার নাম অম্বিয়া খাতুন।শেরপুর জেলার
ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের খাজুরিয়া পাড়া মন্ডল বাড়ীর বাসিন্দা তারা ।

গত ২৬ বছর যাবত তার ভাইকে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও তাকে পায়নি। চাঁনমিয়ার ছোট মেয়ে জানান, তারা দুই বোন ও এক ভাই, ১৯৯৬ সালে তার বাবা মায়ের সাথে অভিমান করে বাড়ী থেকে বের হয়।

তার কিছু দিন পর তার মা রিক্তা শেরপুরের ভুমি অফিসে অফিস সহায়ক হিসাবে একটি সরকারি চাকরি পান।মায়ের উপার্জন দিয়ে তাদের পরিবার চলতো । গত দুই বছর মা রিক্তা অসুস্থ হয়ে বাড়ীতে বিছানায় শুয়ে আছেন ।

তিনি অরো জানান ফেনীর সামাজিক সংগঠন “সহায়”এর ফেইসবুক পেইজে গত ১৩ জানুয়ারি
তার বাবার ছবি দেখে তাকে চিনতে পারেন তারা। পরে মুঠোফোনে বাবার সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে আলাপ করে নিশ্চিত হন চাঁন মিয়া বেঁচে আছেন ।

ফেনীর সামাজিক সংগঠন সহায়ের প্রধান সমন্বয়ক মঞ্জিলা মিমি বলেন,অজ্ঞাত পরিচয় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর সকালে অসুস্থ অবস্থায় ছাগলনাইয়া থেকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয় । ভর্তির পর থেকে চাঁন মিয়া স্ত্রীর সাথে অভিমানের জেরকে এখনো বহাল রেখে তার পরিবারের সদস্য ও তার বাড়ীর ঠিকানা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এর পরে তার দেওয়া আংশিক তথ্য দিয়ে সংগঠনের সহ-সভাপতি জুলহাস তালুকদার শেরপুরের বিভিন্ন স্যোসাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে
পরিবারের খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় এবং তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় ।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ইকবাল হোসেন জানান, চাঁনমিয়া বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগ ও মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ায় বর্তমানে তিনি কিছুটা সুস্থ আছেন।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version