দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

এক সময় গরু-ছাগলের বিচরণ ভূমি ছিল তিস্তা নদীর চর। তিস্তার মাছই ছিল চরের বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা। মাছ ছাড়া জীবিকার কোনো পথ ছিল না। মাছ ধরার পাশাপাশি কেউ কেউ ধান আবাদ করে সংসারের চাহিদা মেটাত। এখন সেই চরের জমি আর পতিত নেই। পাল্টে গেছে চরের দৃশ্যপট।

তিস্তার বুকে জেগে উঠা রূপালী বালু চর এই শীত মৌসুমে ঢাকা পড়েছে সবুজের চাদরে। বন্যার ধকল কাটিয়ে শত শত কৃষকের ফসলের মাঠে চলছে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার প্রাণান্তর চেষ্টা। তবে ব্যাংক থেকে সুদবিহীন শষ্য ঋণ না পাওয়ায় তাদের দ্বারস্থ হতে হয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে। তাদের লাভের অংশ গিলে খায় দাদন ব্যবসায়ীরা। সবকিছু ঠিক থাকলে নীলফামারীর ডিমলা আর জলঢাকা উপজেলায় জেগে ওঠা তিস্তা নদীর ২৩টি চরে এই মৌসুমে উৎপাদন হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ফসল।

বর্ষায় সর্বগ্রাসী হয়ে উঠে তিস্তা। আবার শীত মৌসুমে বিশাল বালুর প্রান্তর হিসাবে ধরা দেয় সবার দৃষ্টিতে। তিস্তা এখন আর নদী নেই যেন বিস্তীর্ণ বালুচর। বর্ষায় ভাঙ্গা আর শীতকালে গড়া এ দু নিয়ে থাকতে হয় তিস্তা পাড়ের মানুষদের। তিস্তার আর্শীবাদে বেঁচে থাকতো অসংখ্য পরিবার কিন্তু অনাকাঙ্খিত বন্যা আর অসম্ভব শুষ্কতার কারণে তিস্তার বুকে তারা আর আহার খুঁজে পায় না। অভাব, বন্যা, খরা, শীতের মত শত্রুর সাথে যুদ্ধ করে বাঁচতে হয় সেখানে। কিন্তু তবুও তারা ছাড়তে পারে না তিস্তার কোল। ছাড়বেই বা কি করে কারণ ঐ পাড়ের সাথে রয়েছে তাদের নাড়ির সর্ম্পক। গেল বন্যায় কাটা ধানসহ সহায় সম্বল হারানো মানুষগুলো এখন ঘুরে দাঁড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভবনার ফসল উৎপাদনে।

আর সেখানেই আগামীর স্বপ্ন বুনছেন নদী পাড়ের মানুষ। চরগুলোতে ভুট্টা, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ প্রায় ১০ ধরনের ফসল চাষ করছে কৃষকেরা। ডিমলা আর জলঢাকা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী, খালিশা চাপানী, টেপাখরিবাড়ী, পূর্ব ছাতনাই, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী ও শৌলমারী ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ২৩টি চরে প্রায় ৩হাজার ২৭৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে এসব ফসল।
তবে ডিজেল ও সারের দাম বেশী হওয়াসহ দাদন ব্যবসায়ীদের সুদ পরিশোধের পরে কাঙ্খিত লাভ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। উর্বর চরে স্বাচ্ছন্দে বিভিন্ন ফসল ফলাতে সরকারি প্রণোদনা ও সুদবিহীন শষ্য ঋণের দাবি করেন।

ঝুনাগাছ চাপানী চরের আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত আমন মৌসুমে হঠাৎ বন্যার কারণে ধান ঘরে তুলতে পারি নাই। জমির ধান বন্যার পানিত ভাসি গেইছে। ভাত খাওয়ার মত কোন ধান ঘরত তুলিবার পাই নাই। ভুট্টা লাগার পরে এখন সার আর তেলের দাম বেশী। কাটা মাড়াইর সময় যদি ভুট্টার দাম না বাড়ে তাহইলে এবারও হামরা মরি যামো। তার ওপর এই আবাদ করছি দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থাকি সুদের টাকা নিয়া।’

নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গত বর্ষায় তিস্তার উজানের ঢলে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২টি বাঁধ ভেঙ্গে ৮২৬ হেক্টর জমিতে পানি প্রবেশ করে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকার কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে তাদের। কৃষকেরা যে ভাবে ফসলের পরিচর্যা করছে তাতে এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আশানুরূপ ফসল উৎপাদন হবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version