দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

অশ্নীল ফোনালাপের অডিও ফাঁসের জেরে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারিয়ে সমালোচনার মুখে কানাডায় পাড়ি জমাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে অবশেষে দেশে ফিরেছেন ডা. মুরাদ হাসান। দেশ ছাড়ার দু’দিন পর গতকাল রোববার বিকেলে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের এড়াতে বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক টার্মিনালের বদলে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে চুপিসারে কেটে পড়েন বিতর্কিত এই সংসদ সদস্য।

এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্নীল মন্তব্যের অভিযোগে মুরাদসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও চারটি জেলায় একই অভিযোগে অভিন্ন আইনে আরও চারটি মামলার আবেদন করা হয়েছে মুরাদের বিরুদ্ধে।

গত বৃহস্পতিবার এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ডা. মুরাদ রওনা হয়েছিলেন কানাডার উদ্দেশে। কিন্তু কানাডায় ঢুকতে না পেরে তিনি দুবাইয়ে ফিরে যান। সেখান থেকে দেশে পৌঁছান বলে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ইমিগ্রেশন) আসাদুজ্জামান সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।

ইমিগ্রেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, রিফিউজড (প্রত্যাখ্যাত) প্যাসেঞ্জারদের এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ পাসপোর্টসহ তাদের কাছে বুঝিয়ে দেন সংশ্নিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে। তাকেও সেভাবেই হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, মুরাদের দেশে ফেরার খবরে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিপুলসংখ্যক সংবাদকর্মী বিমানবন্দরে ভিড় করেছিলেন। দুপুর থেকেই তারা ভিআইপি টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকায় অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের এড়াতে ও ক্যামেরাবন্দি হওয়া থেকে বাঁচতে ভিন্ন কৌশলে মুখমণ্ডল ঢেকে বের হন। এর আগে সকালেও তার দেশে ফেরার খবর ছড়িয়ে পড়েছিল।

বিমানবন্দরের আরেকটি সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তিনি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ব্যবহার না করে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে চুপিসারে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। যদিও এর আগে তিনি সিআইপি গেট ব্যবহার করতেন।

তবে বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে পদত্যাগী এই প্রতিমন্ত্রী কোথায় গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গতকাল বিকেল থেকেই মুরাদের মোবাইল ফোনটি খোলা পাওয়া গেলেও তিনি কারও কলই ধরছেন না। তার বিদেশ যাওয়া কিংবা ফিরে আসার বিষয়ে তার পরিবার কিংবা সংশ্নিষ্ট কারও কোনো বক্তব্যও জানা যায়নি।

এর আগে করোনা টিকা সনদ না থাকাসহ নানা জটিলতার কারণে মুরাদকে কানাডায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে তিনি দুবাইয়ের ভিসা পাওয়ার চেষ্টায়ও ছিলেন। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরে আসতে হয়েছে তাকে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, করোনা টিকা সনদ ও কভিড প্রটোকল না মেনে তিনি কীভাবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কানাডায় গেলেন। এ ঘটনার সঙ্গে বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা জড়িত বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর গোয়েন্দা সংস্থা।

যাত্রীদের ভোগান্তি স্বচক্ষে দেখতে রোববার বিমানবন্দরে পরিদর্শনে এসেছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এবং বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান। এ সময় সাংবাদিকরা তাদের কাছে ডা. মুরাদের বিষয়ে জানতে চান।

মাহবুব আলী বলেন, বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য বিভাগের পৃথক ডেস্ক রয়েছে। টিকার সনদের বিষয়টি তারা পরীক্ষা করে থাকেন। এ বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী। তৌহিদ-উল আহসান বলেন, বিমানবন্দর দিয়ে যে যাত্রীই বাইরের দেশে যান, তাদের স্বাস্থ্য সনদ ও কভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট-সংক্রান্ত চেক করার কাজ হচ্ছে বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের। বিমানবন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে সিভিল এভিয়েশন।

তবে বিমানবন্দর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ সমকালকে বলেন, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছার পর ডা. মুরাদের কাছে কভিড-১৯ সার্টিফিকেট ছিল। বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকর্মীদের তা দেখিয়েছেনও তিনি।

টেলিফোনে এক চিত্রনায়িকাকে অশালীন মন্তব্য এবং ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অডিও ফাঁস হওয়ার পর গত সোমবার ডা. মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মুরাদের কোনো খোঁজ না মিললেও বৃহস্পতিবার রাতে নাটকীয়ভাবে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। তখনই জানা যায়, কানাডা যেতে এমিরেটসের ফ্লাইটে উঠছেন তিনি। কিন্তু টরন্টোর পিয়ারসন বিমানবন্দরে মুরাদকে আটকে দেয় দেশটির বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি। এবার কানাডায় যাতে তাকে ঢুকতে দেওয়া না হয়, সেজন্য প্রবাসীদের একটি অংশ সক্রিয় ছিলেন বলেও জানা গেছে।

মুরাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন: জাইমা রহমান সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্নীল মন্তব্যের অভিযোগে ডা. মুরাদ হাসানসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী। মামলার অপর আসামি হলেন মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদ, যিনি নাহিদ রেইন্স নামেও পরিচিত। আজ সোমবার শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটেও মামলা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version