দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

রাজারবাগ পীর-অনুসারিদের কার্যক্রম জঙ্গিবাদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ

রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমান ও তার অনুসারিদের কার্যক্রম জঙ্গিবাদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে জঙ্গি দমনে পুলিশের বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। প্রতিবেদনে তারা বলেছে, পীর দিল্লুর রহমান ও তার অনুসারিদের প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে নানাভাবে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটছে। পূর্বনির্দেশনা অনুসারে আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে এই প্রতিবেদন দাখিল করে সিটিটিসি।

প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে রাজারবাগ পীরের কর্মকাণ্ডের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে সিটিটিসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হাই কোর্ট বলেছে, তারা প্রয়োজনে রাজারবাগ পীরসহ চারজনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে। পাশাপাশি সিআইডির প্রতিবেদনের আলোকে ভুক্তভোগীরা চাইলে রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে বলে আদেশ দিয়েছে আদালত। এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে হাই কোর্ট। আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও এমাদুল বশির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। আর রাজারবাগ পিরের পক্ষে ছিলেন এম কে রহমানসহ একাধিক আইনজীবী।

হাইকোর্টের নির্দেশের পর রাজারবাগ পীর ও অনুসারিদের জঙ্গীসম্পৃক্ততা নিয়ে তদন্তে নামে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম। তদন্ত শেষে হাই কোর্টে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

 

গোপালগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে ‘গোলাপগঞ্জ’ করা হয়:

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজারবাগ পীর ও তার অনুসারিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মস্থান গোপালগঞ্জের নাম বদলে গোলাপগঞ্জ করে তাদের আলোচ্য পত্রিকার (দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত) মাধ্যমে প্রচার করছে। এছাড়াও নারায়নগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করে নূরানীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও জেলার নাম পরিবর্তন করে নূরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাম পরিবর্তন করে আমানবাড়িয়া-  এরকম আরও বেশ কয়েকটি জেলা ও স্থানের নাম পরিবর্তন করে তারা নিজেদের সাম্প্রদায়িক মনোভাব সারাদেশে সাধারন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

নিজস্ব দুটি পত্রিকায় ছড়ানো হয় ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ: প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মান্ধ। মানুষের এই ধর্মানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এই পীর এবং তার দরবার শরীফ সামাজিকভাবে কুসংস্কার, ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। পীর দিল্লুর রহমান এর দরবার থেকে প্রকাশিত আলোচিত দুটি পত্রিকা ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত ও দৈনিক আল ইহসান’ এর মাধ্যমে গুটি কয়েক ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে নানাভাবে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় কুসংস্কার সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটছে। তাদের এসকল কার্যক্রম সরাসরি সরকারি নীতিমালা, দেশের প্রচলিত আইন, সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক এবং সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরোধী। দেশের বিভিন্ন থানায় রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর ও তার মুরিদদের বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলা ও মামলাসমূহের তদন্তের ফলাফলে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

পীর ও তার অনুসারিদের কার্যক্রম জঙ্গিবাদেও সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ: সিটিটিসি’র প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, রাজারবাগ দরবারের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘দৈনিক আল ইহসান’ ও ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত’ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা, তাদের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত বিভিন্ন বই, ইতোপূর্বে তাদের কার্যক্রম এবং বিভিন্ন জেলায় তাদের অনুসারিদের কার্যক্রমের কারণে রুজুকৃত মামলা ও মামলাসমূহের তদন্তের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা ইসলাম ধর্মের নামে এবং অনেক ক্ষেত্রে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের খন্ডিত ব্যাখ্যার মাধ্যমে এ দেশের ধর্মভীরু মানুষকে ভুলপথে পরিচালিত করে ধর্মের নামে মানুষ হত্যা ও তথাকথিত জিহাদকে উস্কে দিচ্ছে। এদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলো যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের মতবাদ প্রচার করছে ও কার্যক্রম চালাচ্ছে রাজারবাগ দরবার শরীফ এর পীর, তার সহযোগি ও অনুসারিদের কার্যক্রম জঙ্গিদের কার্যক্রমের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ভিন্নধর্মীদের ‘কতল’ করার আদেশ: প্রতিবেদনের মতামত অংশে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মতাবলম্বী ও ভিন্ন ধর্মের মানুষকে, তাদের ভাষায় মাল’উনদেরকে হত্যা করা ঈমানী দায়িত্ব উল্লেখ করে ফতোয়া এবং এক্ষেত্রে কতল করার আদেশ দিয়েছে, যা মূলত বাংলাদেশের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন নব্য জেএমবি ও আনসার আল ইসলামের মানুষকে হত্যা করার ফতোয়ার অনুরূপ। এটি ইসলামের নামে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন সমূহের মত একই প্রক্রিয়ায় বিরোধীদের অর্থাৎ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের হত্যা করার ও ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার কৌশল। তাদের এ ধরনের বক্তব্য মানুষকে জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত করবে, অসহিষ্ণু করবে সাম্প্রদায়িক চেতনা নষ্ট করতে ভূমিকা রাখবে। তাই সার্বিক পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে সিটিটিসির কাছে প্রতীয়মান হয় যে, তারা এখনও জঙ্গি সংগঠন হিসেবে কালো তালিকা ভুক্ত না হলেও তাদের বিভিন্ন প্রকাশনা, বক্তব্য, মুরীদ ও অনুসারিদের প্রতি তাদের নির্দেশনার ফলে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সাথে তাদের এসকল বক্তব্য ও প্রচার প্রচারণা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া ব্যক্তিদের ‘লোন উলফ’ হামলায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version