দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি প্রায় দুই মাস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এই শীতেই আবার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা, যা তৃতীয় ঢেউ হিসেবে চূড়ান্ত আঘাত হানতে পারে আগামী মার্চ নাগাদ। তারা বলছেন, ব্যাপকহারে টিকাদানের ফলে মৃত্যু কমলেও শীতে পশ্চিমা বিশ্বে আবারও হু হু করে সংক্রমণ বাড়ছে। এসব দেশ থেকে প্রবাসীরা শীতে বেড়াতে আসে। বাংলাদেশে এখনো খুব বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসেনি। উঠে গেছে স্বাস্থ্যবিধি। শীতে বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়েছে। এসব কারণে আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে করোনা পরিস্থিতি। দ্রুত টিকার কভারেজ না বাড়লে এখানে তৃতীয় ঢেউয়ের আঘাতে প্রচুর প্রাণহানিরও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ২৫৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১.৪০ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১.২৫ শতাংশ। গত এক দিনে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। আগের দিন মারা গিয়েছিলেন পাঁচজন। হাসপাতালের আইসিইউ ফাঁকা থাকলেও করোনায় প্রাণহানি থামছে না। সব বয়সের মানুষই মারা যাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। বাকিদের বয়স ছিল ৪১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে।

দেশে নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণ শনাক্তের হার গত ৪৫ দিন ধরে ৩ শতাংশের নিচে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, টানা ২১ থেকে ২৮ দিন শনাক্তের ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। সেই হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে গত ফেব্রুয়ারিতেও দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে নতুন করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় মে থেকে ফের করোনার তা-ব শুরু হয়। শুধু জুলাই মাসেই মৃত্যু হয় ৬ হাজার ১৮২ জনের, যা এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু। সেপ্টেম্বর থেকে সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যু কমছে। এদিকে ব্যাপকহারে টিকাদানের ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ অধিকাংশ পশ্চিমা দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও শীত পড়তেই আবারও লাগাম ছাড়াচ্ছে সংক্রমণ। গত বছরের নভেম্বরেও যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক প্রায় দেড় লাখ রোগী শনাক্ত হয়। টিকাদানের ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসে। চলতি বছরের ১৬ থেকে ১৮ জুলাই দুই দিনে দেশটিতে রোগী শনাক্ত হয় ৭৬ হাজার ৯০৪ জন। শীত আসতেই ফের করোনার তা-ব শুরু হয়েছে দেশটিতে। গত এক দিনেই যুক্তরাষ্ট্রে ৯৯ হাজার ১৪৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ১ হাজার ১৪৭ জন। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জার্মানি, তুরস্ক, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসসহ অধিকাংশ পশ্চিমা দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। তবে ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মার্চে তৃতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাস পাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের দেশে একই গ্রুপের অন্যান্য ভাইরাস সক্রিয় থাকায় করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে ঢোকার সুযোগ কম পাচ্ছে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই ভাইরাসগুলো সক্রিয় থাকায় সংক্রমণ তুলনামূলক কম থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ বাড়তে পারে, যা মার্চে গিয়ে ব্যাপক আকার ধারণ করবে। এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শীতকালে যেভাবে সামাজিক অনুষ্ঠান বাড়ছে, সেই সঙ্গে অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, তাতে শীতেই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। এখনই লাগাম টানতে না পারলে ফেব্রুয়ারির পর করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে। তিনি বলেন, শীত আসতেই পশ্চিমা বিশ্বে সংক্রমণ বাড়ছে। তবে টিকার কারণে মৃত্যু কম। যারা মারা যাচ্ছেন তাদের ৮০ ভাগই টিকা নেননি। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে চলাফেরায় কোনো বাধা নেই। ফলে মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাচ্ছে। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এসব দেশ থেকে শীতকালে বাংলাদেশিদের দেশে আসার একটা প্রবণতা আছে। এতেও সংক্রমণ ঝুঁকি আছে।

তিনি বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকতে থাকতেই এখানে টিকার কভারেজ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা, সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও শনাক্ত সব রোগীর আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় বিপদ আসন্ন। এদিকে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় নতুন করে আবারও প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গত ৫ নভেম্বর সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাছে চিঠি পাঠায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় সর্বস্তরে স্বাস্থ্যবিধি পালন ও মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ, হাট-বাজার, চায়ের দোকান বা জনসমাগম হয় এমন স্থানে ভিড় পরিহারের ব্যবস্থা, ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ, বয়স্কদের ভ্যাকসিন সেন্টারে আসতে সহায়তা করা, স্বাস্থ্যবিধি পালনে প্রচারের ব্যবস্থা করা, সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহারে উদ্বুদ্ধ করা এবং করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version