সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সদস্যসচিব মালেক হোসেন পীর (৬৮) আর নেই।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মালেক পীর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে মারা যান।
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ। তাঁর দুর্নীতিবিরোধী লড়াই, সংগ্রাম নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠে একাধিক সংবাদ প্রচার হয়েছিল। তিনি কালের কন্ঠের সম্মাননাও পেয়েছেন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী তেঘরিয়া পীর বাড়ির মছব্বির হোসেন পীর ও গুলচেরা বেগমের ছয় সন্তানের মধ্যে সবার বড় মালেক হুসেন পীর। ১৯৭১ সনে দশম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে বাড়ি থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। ছিলেন বালাট সাব-সেক্টরের প্রথম ব্যাচের একজন গেরিলা যোদ্ধা। যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরে তিনি অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি সামাজিক নানা আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন।
জেলাব্যাপী একজন প্রতিবাদী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ছিলেন মালেক পীর। তিনি স্বৈরাচারী এরশাদের সময় চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মিছিল করে গ্রেপ্তার হন। জেলা আওয়ামী লীগের দুইবারের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্যসচিব হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন তিনি। শেষ বয়সে অভাব-অনটনে দিন কাটত তাঁর। ভাঙা ঘরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন।
সুনামগঞ্জের এই মহান বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদু মুকুট, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন প্রমুখ।