আরিফ শেখ, রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুস গ্রহন, হয়রানি ও নারী কর্মীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আব্দুস সালাম ৭ মার্চ ১৯৮৯ সাল থেকে তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে ৩২ বছর ধরে চাকুরি করার সুবিধার্থে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। হাসপাতাল এলাকা পুরোটায় তার নিয়ন্ত্রনে চলে।
তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন, মাঠকর্মীদের সম্মানী ভাতা, হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন, স্টাফদের হয়রানি, উঠান বৈঠক, খুদে চিকিৎসক ক্যাম্পেইন, ঘুষ গ্রহণ, কোভিড টিকা ক্যাম্পেইনে গুজব রটানো এবং বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের এলাহী বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের সাবেক এমএইচভি তাসলিমা বেগম সিভিল সার্জন হিরম্বর কুমার রায়কে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, আমার কাছে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালাম ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন যোগদানের ব্যাপারে। আমি পারিবারিক মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বা প্রমানীত না হয়েও আমাকে ভাতা না দিয়েই বিনা কারণে দীর্ঘদিন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘুষ চেয়ে অবশেষে আমাকে বিনা নোটিশে বা অবগত না করেই অন্য এক জনকে আমার পদে নিয়োগ দিয়েছে টাকার বিনিময়ে। এমএইচভি অব্যহতি/অপশারনের শর্ত সমূহ ৭ নং কলামে উল্লেখ আছে, কেউ ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে বা প্রমাণিত হলে তবেই পদ হারাবে। অথচ আব্দুস সালাম টাকা না পেয়ে তাসলিমা কে দোষি ঘোষনা করে আইন লঙ্ঘিত করে অবিচার করেন।
তাসলিমা আরও জানান, আমাকে অন্যায় ভাবে চাকুরিচ্যুত করলেও আমার নামে নিয়মিত বেতন-ভাতা আসে জানতে পারি । শুনেছি আব্দুস সালাম আমার সেই বেতন সহ আরও ৪ জনের বেতন উত্তোলোন করার চেষ্টা করেছিলেন।
তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারন-অর-রশিদ বাবুল রংপুরের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) মোতাহারুল ইসলাম বরাবর লিখিত অভিযোগ স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালাম। অভিযোগে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালাম ইউনিয়ন পর্যায়ে ৭ আগষ্ট ২১ কোভিড-১৯ গন টিকাদান কেন্দ্রে টিকা নিয়ে মিথ্যাচার ও গুজব রটিয়ে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেন । সালাম সাহেব সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে মানুষজনকে ভরকে দেন । ফলে মানুষজন টিকা না নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কেন্দ্রটি থেকে পালিয়ে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয় , স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুস সালাম এক পর্যায়ে প্রশ্নবিদ্ধ হলে উত্তেজিত হয়ে আপত্তিকর কথা বার্তা বলে চুপ থাকতে নিষেধ করেন স্বেচ্ছাসেবী ও টিকাদান কর্মীদের। সরকারের সুনাম নষ্ট করার এই অপতৎপরতার বিস্তারিত লিখে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহনের জোর দাবি জানানো হয় অভিযোগে।
তারাগঞ্জ উপজেলা আওযামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারন-অর-রশিদ বাবুল বলেন , আমি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত যে অভিযোগ করেছি তা সম্পূর্ন সঠিক। মাননীয় প্রধামন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি গণটিকা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এহেন নেক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি ।
পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সামসুন্নাহার বলেন , আব্দুস সালামের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পত্র আমার হাতে এসেছিল । তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছি ।