সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে মাছের ভাণ্ডারখ্যাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে দেখা মিলছে না ইলিশের। ভরা মৌসুমে ইলিশ না পেয়ে খালি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ফিরছেন বাগেরহাটের জেলেরা। এই অবস্থায় মৌসুমের পাঁচ মাস পার হলেও এ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেনি কোনো জেলে-মহাজন।
চলতি সপ্তাহে সাগর থেকে উঠে আসা একেকটি ফিশিং ট্রলারে মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা। এতে তেল খরচও ওঠেনি। লাখ লাখ টাকা লোকসানে রয়েছেন জেলের-মহাজনরা। সবার চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। বাগেরহাটের মৎস্য পল্লীতেও নেই তেমন কর্মচঞ্চলতা।
বঙ্গোপসাগরে সুন্দরবন উপকূলে ভাণ্ডার সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে ইলিশ না পেয়ে হতাশ বাগেরহাট ফিসারীঘাট ও শরণখোলার রায়েন্দা ফিসারীঘাটের জেলে-মহাজনরা।
তারা বলেন, আমরা গহীন সমুদ্রে মাছ ধরি। সুন্দরবন উপকূলে মাছের ভাণ্ডারখ্যাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে কোনো ইলিশ মাছ পাইনি, তাই সাগর থেকে এসেছি। যত টাকা খরচ করে সাগরে ইলিশ ধরতে গেছি তার অনেক টাকা দেনা আছি। এখন আমরা কিভাবে চলবো। এভাবে মাছ না পেলে জেলে-মহাজনদের লাখ লাখ টাকা দেনা হয়ে যাবে। এসব জেলে-মহাজনরা বলছে, গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরে জাল ফেলেছি অথচ কোনো মাছ পাচ্ছি না।
ট্রলার মালিকরা বলছে, ইলিশের ভরা মৌসের সময় ৬৫ দিনের অবরোধ থাকায় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে অবাধে ইলিশ মাছ ধরে নিয়ে গেছে। ভারতীয় জেলেরা অবরোধের সময় সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে মাত্র ২০-২৫ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে মাছের ভাণ্ডারখ্যাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে ঢুকে ইলিশ মাছ ধরে নিয়ে যায়। অবরোধের সময় মাছ না ধরলে সেই মাছটা এখন জেলেদের জালে ধরা পড়ত। যার ফলে দেশীয় জেলেরা এখন লোকসান গুনছে।
বাগেরহাট জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, বাগেরহাট জেলায় ছোটবড় মিলিয়ে সহস্রাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলাতেই রয়েছে তিন শতাধিক ফিশিং ট্রলার। অবরোধের পর এবার বাগেরহাটের কোনো ফিশিং ট্রলারেই কাঙ্খিত ইলিশ পায়নি। এক-একটি ফিশিং ট্রলার সাগর থেকে ফিরে আসার পর দেখা যাচ্ছে তেল খরচও উঠছে না অনেকের।
শরণখোলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএস পারভেজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়তো সাগরের কোনো-কোনো এলাকায় ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জেলে-মহাজনদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারছি। তবে এমন অবস্থা সাময়িক। সাগরে আবহাওয়ার লঘুচাপ সরে গেলেই মাছের ভাণ্ডারখ্যাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে দেখা মিলবে কাঙ্খিত ইলিশের।