একাত্তরের গণহত্যা, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের আইএসআই (ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স) জড়িত থাকার অপরাধে পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
এই দাবিতে আজ শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকাস্থ পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে সংগঠনটি। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সহ-সভাপতি শাহীন মাতুব্বর, মাকসুদ হাওলাদার, ফরহাদ হোসেন, জিয়া হোসেন, শেখ সম্রাট, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শের সম্রাট খান, প্রচার সম্পাদক বেলাল হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবর স্মারকলিপি গ্রহণ করেন গুলশান ডিপ্লোমেটিক জোনের ডিসি আশরাফুল ইসলাম।
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টায় পাকিস্তানের আইএসআই সরাসরি জড়িত ছিল। পাকিস্তান জঙ্গিবাদের মদদদাতা হিসেবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তানকে অবিলম্বে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমাদের পিতারা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল। ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হানির অপরাধে পাকিস্তান আজও পর্যন্ত বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইনি। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির দোসর জিয়া-মোশতাক চক্রকে দিয়ে পাকিস্তান পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় মদদে খুনি তারেক জিয়ার মাধ্যমে জঙ্গিদের গ্রেনেড সরবরাহ করে, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে বেঁচে গেলেও সেদিন ২৪ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী শহীদ হয়েছিলেন। স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি অপশক্তির ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। এরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে শক্তির বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গি অপশক্তিকে মদদ দেওয়ার অপরাধে পাকিস্তানকে অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র আমরা রুখে দেব। জঙ্গিবাদের মদদদাতা পাকিস্তানের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনীতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’
তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরের গণহত্যা, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের আইএসআই জড়িত থাকার অপরাধে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাকিস্তানের বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানসহ কঠোর আন্দোলনে যাবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’