যত দ্রুত সম্ভব একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন মালয়েশিয়ার রাজা আল সুলতান আবদুল্লাহ। তবে প্রধানমন্ত্রী হতে হলে ওই প্রার্থীকে অবশ্যই পার্লামেন্টে সংখ্যাগষ্ঠিতার প্রশ্নে আস্থাভোটের মুখোমুখি হতে হবে। বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে রাজপ্রাসাদ থেকে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন হারিয়ে সোমবার পরাজয় মেনে নেন প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তবে রাজার নির্দেশে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তাকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন দেড় বছরেরও কম। এ সময়ে বার বার তার বিরুদ্ধে আস্থাভোটের আহ্বান জানানো হলেও, তার অফিস সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
কিন্তু সম্প্রতি ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (উমনো) ৮ জন এমপি তার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর তার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। ফলে সোমবার তিনি পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় রাজা আল সুলতান আবদুল্লাহ, যিনি সাংবিধানিক রাজা, তিনি একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দেবেন, যার পার্লামেন্টে সংখ্যারিগষ্ঠতা থাকবে। এ জন্য তিনি পার্লামেন্ট সদস্যদের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে একজন প্রার্থীর নাম দিতে বলা হয়েছে, যাকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে।
রাজপ্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজা যাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন, তাকে পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পাস করে আসতে হবে। সেটা করতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে একত্রিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজা। রাজপ্রসাদ থেকে বলা হয়েছে, করোনা ভাটইরাসের এই মহামারি যখন দেশ মোকাবিলা করছে, তখন অসমাপ্ত রাজনৈতিক টলটলায়মান পরিস্থিতি সরকারযন্ত্রে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এর কোনো বিরতি নেই।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। ওই নির্বাচনে স্বাধীনতার পর কমপক্ষে ৬০ বছর দেশ শাসন করা উমনো দল পরাজিত হয়। এ সময় বিরোধী জোটের নেতৃত্বে ছিলেন ৯৬ বছর বয়সী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। নির্বাচনে তার নেতৃত্বে প্রথম বিরোধীরা বিজয়ী হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। গত বছর ক্ষমতাসীন জোটের ভিতরে বিরোধে তার সরকার ভেঙে যায়। তিনি পদত্যাগ করেন। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ঘুঁটি চালেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তিনি নিজের দলের কয়েকজন এমপিকে সঙ্গে নিয়ে যোগ দেন সদস্য বিরোধী দলে থাকা উমনোর সঙ্গে। তাদের সমর্থন নিয়ে তিনি এক ভঙ্গুর জোট গঠন করেন।
ওদিকে কে হতে পারেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। তবে শীর্ষ স্থানীয় প্রার্থী হিসেবে উমনোর রাজনীতিক এবং মুহিদ্দিনের ডেপুটি ইসমাইল সাবরিকে দেখা হচ্ছে। তিনি ওইসব রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন পেতে যাচ্ছে, যারা মুহিদ্দিনের জোটে ছিল। অন্যদিকে সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপির সমর্থন পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আনোয়ার ইব্রাহিম।