দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

প্রথম বিয়ে ছাড়া দুই জান্নাতকেই কন্ট্রাকচ্যুয়াল (চুক্তিভিত্তিক) বিয়ে করেছিলেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা দিতেই দুই ডিভোর্সিকে বিয়ে করেছিলেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি করেছেন মামুনুল। বলেছেন, রয়েল রিসোর্ট কান্ড শুরুতেই স্বীকার করলে প্রথম স্ত্রী আমেনা তৈয়ব বড় ধরনের কান্ড ঘটিয়ে ফেলতেন বলে তার ধারণা ছিল। এ কারণে তৎক্ষণাৎ স্বীকার করেননি। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনই অন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্যের সঙ্গে এসব কথা বলেছেন মামুনুল। তবে কথিত দুই বিয়ের সাক্ষীদের শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে পুলিশ। একই সঙ্গে রিমান্ডে তাকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়েও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।

গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামের এক নারীসহ আটক হয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। ওই সময় ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করলেও তার নাম বলেন আমেনা তৈয়বা। এর কয়েক দিন পরই বাংলাদেশ প্রতিদিন মামুনুলের দ্বিতীয় জান্নাতের সন্ধান… শিরোনামে খবর প্রকাশ করে। এর এক দিন পর দ্বিতীয় জান্নাত অর্থাৎ জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ওই নারীর ভাই মো. শাহজাহান মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি মামুনুল তাকে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে তার বোনকে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। তবে কোনো কাবিননামা দেখাতে পারেননি।

রবিবার দুপুরে গ্রেফতারের পর মামুনুল হককে তেজগাঁ থানায় রাখা হলেও রাতেই গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের নির্দেশে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তবে মামলার তদন্তের দায়িত্ব গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেওয়া হবে বলে অনেকেই বলছেন।
তবে পুলিশের তেজগাঁ বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, মামুনুলকে নিরাপত্তার স্বার্থেই কেবল গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে আমার অফিসাররা গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। মঙ্গলবার (আজ) আমি নিজেই জিজ্ঞাসাবাদে থাকব।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত মামুনুল প্রথম বিয়ে ছাড়া বাকি দুই বিয়ের সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এমনকি বিয়ের সাক্ষীদের নাম প্রকাশের ব্যাপারেও গড়িমসি করছেন। দ্বিতীয় জান্নাতের ভাই শাহজাহানের জিডি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

মামুনুলের দাবি করা তথ্যের বরাত দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার দিতে পারবেন না এমন শর্তেই শরিয়ত মতে দুই জান্নাতকে বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী পরবর্তী বিয়েগুলো মেনে নিতে পারবেন না, বড় ধরনের কান্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারেন- এমন শঙ্কার কারণেই তাকে অন্ধকারে রাখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে প্রথম স্ত্রীকে তিনি শরিয়তসম্মত ও প্রচলিত আইন মেনেই বিয়ে করেছেন। তবে দুই জান্নাতকে বিয়ের দাবি করলেও কোনো কাবিননামা নেই। প্রথম জান্নাত অর্থাৎ জান্নাত আরা ঝর্ণার বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি তার অভিভাবকত্ব নেন। এ সময় তিনি জান্নাতকে পূর্ণ স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবেন না এমন মৌখিক শর্তে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন। মামুনুল হকের দাবি, তার শর্ত জান্নাত আরা মেনে নিয়েছিল। দুই বছর ধরে তিনি জান্নাত আরার ভরণপোষণ ছাড়াও ব্যবসা করার জন্য মূলধন দিয়েছেন এবং কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। দ্বিতীয় জান্নাত অর্থাৎ জান্নাতুল ফেরদৌসীর সঙ্গে তার এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়ান তিনি। একপর্যায়ে তার প্রথম স্বামী গাজীপুরের সাইদুর রহমানের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর তারও দায়িত্ব নেন তিনি। বিয়ে ছাড়াও তার চাকরির ব্যবস্থাও করে দেন মামুনুল। তবে দুই জান্নাতের পরিবারকে অন্ধকারে কেন রাখা হয়েছিল এসব প্রশ্নের উত্তরে নীরব থাকেন মামুনুল।

রয়েল রিসোর্টের বিষয়ে মামুনুলের বক্তব্য ছিল, ব্যস্ততার কারণে জান্নাতের সঙ্গে তার নয় মাস ধরে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছিল না। জান্নাত তাকে সময় দেওয়ার জন্য বারবার বলছিল। ৩ এপ্রিল তার বি. বাড়িয়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বি. বাড়িয়া যাওয়া বাতিল হওয়ায় তিনি ওই দিন জান্নাতকে নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর জন্য সকালে গ্রিন রোডের গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সামনে থেকে জান্নাতকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টের দিকে রওয়ানা দেন তিনি। রয়েল রিসোর্টের মালিকপক্ষ তার পূর্ব পরিচিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, মামুনুল অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। হেফাজতের অর্থনৈতিক সহায়তা কোথা থেকে আসত এই প্রশ্নটি তিনি কৌশলে এড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে এটি হয়তো তিনি পারবেন না। মাত্র তো রিমান্ড পেলাম। দেখা যাক। তবে দেশব্যাপী বেপরোয়া এই তাণ্ডবের নেপথ্যে হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের উসকানি ছিল, যার মধ্যে মামুনুল হক ছিলেন অন্যতম। যদিও এসব ঘটনায় একাধিক মামলা করা হলেও মামলায় হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের কারও নাম ছিল না।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2024 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version