মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

টেনিস বলে কারাগারে মাদক পাচারের নতুন কায়দা

যা যা মিস করেছেন

কাকডাকা ভোর। স্পট চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্শ্ববর্তী জেল রোড এলাকা। দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় থাকা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো আছে জেল রোডে। ওই গাড়িগুলোর ওপর দাঁড়িয়ে কিছু ব্যক্তি টেনিস বল ছুড়ছে কারাগার লক্ষ্য করে। সাধারণ দৃষ্টিতে এটাকে ক্রিকেটের ফিল্ডিং অনুশীলন মনে হলেও আদতে তারা ইয়াবার চালান পাঠাচ্ছে কারাগারে। বেশ কিছু দিন ধরে এ কায়দায় কারাগারের ভিতর ইয়াবার চালান পাঠাচ্ছে মাদক কারবারিরা। নতুন কৌশলে ইয়াবা পাচারের বিষয়টা কারা কর্তৃপক্ষের নজরে এলেও তা নিয়ে অবহিত নয় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি জেল রোডে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির ওপর থেকে ইয়াবার পোঁটলা ছুড়ে মারছে কারাগারের ভিতর। নতুন কায়দায় কারাগারে ইয়াবা আনার সময় একাধিক হাজতিকে আটক করেছেন কারারক্ষীরা। পরে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে ইয়াবা ছুড়ে মারার বিষয়টা নজরে আসার পর কারাগারের জেল রোড অংশে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারাগারের ওই অংশে জোরদার করা হয়েছে টহল। যারা বাইরে থেকে ইয়াবা ছুড়ে মারছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই কারা কর্তৃপক্ষের।’
সিএমপির দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কারাগারে ইয়াবা ছুড়ে মারার বিষয়টা পুলিশের জানা নেই। এটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভিতর ইয়াবা ব্যবসার জন্য গড়ে উঠেছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। তারা কতিপয় কারারক্ষীর সঙ্গে যোগসাজশ করে গড়ে তুলেছে ইয়াবা সিন্ডিকেট। কারাগারের ভিতরে ও বাইরে থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে জেল রোডে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের ওপর দাঁড়িয়ে টেনিস বলে করে বিশেষ কায়দায় পাঠানো হয় ইয়াবার চালান। পরে কারাগারে একেকটি ইয়াবা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। ইয়াবার বিনিময় হিসেবে নেওয়া হয় পিসি ট্রান্সপার কিংবা পণ্য। কারাগারে ইয়াবা পাচারে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট থাকলেও নতুন কায়দায় ইয়াবা পাচারের বড় গ্রুপটির নেতৃত্বে রয়েছে একাধিক মাদক মামলার আসামি ‘যমুনা-৯’-এ থাকা বন্দী তুহিন।

কারাগার থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া এক বন্দী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কারাগারে ইয়াবার চালান পাঠানোর জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করে সময় নির্ধারণ করে ভিতরে ও বাইরে থাকা সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এরপর টেনিস বলে বিশেষ কায়দায় মোড়ানো হয় ইয়াবা। নির্ধারিত সময়ে গাড়ি থেকে ইয়াবার চালান ছোড়া হয় পূর্বনির্ধারিত স্থান লক্ষ্য করে। প্রতিটা টেনিস বলে ৫০ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন ৭ হাজার ৮৫১ জন, যাদের ৮০ শতাংশই মাদক মামলার আসামি। এই উল্লেখ সংখ্যক আসামির বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security