ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সেনা অভিযান শুরুর পাঁচ সপ্তাহের মাথায় তিনি এমন হুমকি দিলেন, যেটির বাস্তবায়ন হলে ইউরোপজুড়ে জ্বালানির সংকট সৃষ্টি হতে পারে। তবে ডেডলাইন পার হলেও ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি রাশিয়া।
গত ২৩ মার্চ প্রেসিডেন্ট পুতিন এমন একটি ডিক্রিতে সই করেছিলেন যাতে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার গ্যাসের ক্রেতাদেরকে রুশ মুদ্রা রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে নতুবা তাদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হবে।
শুক্রবার থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের জারি করা ওই ডিক্রি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সময়সীমা পার হলেও ইউরোপে এখনো প্রবাহিত হচ্ছে গ্যাস।
ফ্রান্স ও জার্মানি অবশ্য রাশিয়ার এই দাবিকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ বলে অভিযোগ করেছে। পশ্চিমা কোম্পানিগুলো অবশ্য এই ডিক্রিকে বিদ্যমান চুক্তির খেলাফ বলে অভিহিত করেছিল কারণ, এসব চুক্তিতে ইউরো বা ডলারে মূল্য পরিশোধের সুযোগ ছিল।
তবে রুশ প্রেসিডেন্ট আগের সব চুক্তি বাতিল করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তার জারি করা ডিক্রি কার্যকর হওয়ার আগ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট পুতিন বৃহস্পতিবার এক ভাষণে বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ বিনামূল্যে কিছু বিক্রি করে না, আর আমরাও জনসেবার উদ্দেশ্যে কিছু করতে যাচ্ছি না। কাজেই আগের সব চুক্তি বাতিল করা হলো।’
তিনি বলেন, ইউরোপকে অবশ্যই রুশ মুদ্রায় জ্বালানির দাম পরিশোধ করতে হবে।
এতদিন ধরে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে গ্যাসবাবদ ইউরোতে মূল্য পরিশোধ করে আসছিল। কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান শুরু হওয়ার পর মস্কোর বিরুদ্ধে ইউরোপীয়রা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধের ডিক্রি জারি করেন পুতিন। তবে তার ডিক্রিতে একথা জানানো হয়নি সব অর্থই রুবলে পরিশোধ করতে হবে নাকি কিছু অংশ এখনও ইউরোতে দেয়া যাবে।
ইউরোপীয়রা গতমাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এমন সময় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যখন তাদের মোট গ্যাস চাহিদার ৪০ শতাংশ এবং তেল চাহিদার ৩০ শতাংশ রাশিয়ার কাছ থেকে সংগৃহিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও ইউরোপীয় দেশগুলো তা করেনি।
তবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্ধারিত সময়সীমা পার হলেও রাশিয়ান গ্যাস ইউরোপে প্রবাহিত হচ্ছে। এটি এখন কোন পর্যায়ে গড়ায় সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স