নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী হাজং সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী দেউলী উৎসব। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) উত্তর রানীগাঁও গ্রামে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন আদিবাসী লেখক ও গবেষক মতিলাল হাজং।
বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষার জন্য ইউনেস্কো ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অর্থায়নে আদিবাসী কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় আদিবাসী কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কবি মং এ খেন মংমং এর সভাপতিত্বে ও দোলন হাজং এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন, সহকারী কমিশনার ভূমি মো. মাহমুদুল হাসান, হালুয়াঘাট কালচারাল একাডেমির পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় স্নাল, খারনৈ ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক, আরবান বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর আবুল আসাদ, বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সভাপতি পল্টন হাজং, সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাজং রনি, বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের সভাপতি সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রিজম হাজং, হাজং ছাত্র কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাঈম হাজং।
আদিবাসী কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কবি মং এ খেন মংমং বলেন, হাজংরা উৎসবমুখর জাতি। হাজংদের অধিকাংশ উৎসব বিলুপ্তির পথে। তাদের ধর্মীয় ও কৃষিভিত্তিক উৎসবগুলো মধ্যে দেউলী উৎসব একটি অন্যতম বর্ণিল উৎসব। হাজংরা নিজেদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতি চর্চা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে যেন আরও বেশি যত্নশীল হয় এবং তারা যেন তাদের সোনালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতে পারে এটাই আমাদের এই উৎসব আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
উদ্বোধক মতিলাল হাজং বলেন, দেউলী উৎসব আমাদের আত্মপরিচয়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি জীবন্ত প্রতীক হিসেবে কাজ করে। আদিবাসী কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা এবং ইউনেস্কো ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরকে ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করার জন্য।
প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের দেশের অনেক সমৃদ্ধ আয়োজন হারিয়ে যাওয়ার পথে। সে সমৃদ্ধ আয়োজনকে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং উৎসবগুলোকে প্রাণবন্ত করার জন্য ইউনেস্কোসহ নানা দেশি-বিদেশী সংস্থা নানাভাবে সহযোগীতা করে থাকে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং সরকার আপনাদের পাশে আছে ছিল এবং থাকবে। আমি যতটুকু জানতে এই গ্রামে ২ হাজার হাজং জনগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সব রকমের সহযোগিতা সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত হাজং শিল্পীরা নৃত্য ও সংগীতের মাধ্যমে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি তুলে ধরেন।


