দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শহরের লাবণি পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। শুক্রবার বিকালে এ এলাকায় দেখা গেছে, পর্যটকের স্রোত। যেখানে সৈকতের বালিয়াড়ি আর মানুষ মিলেমিশে একাকার। মানুষে ভরপুর কক্সবাজার সৈকতে ঠিক কত পর্যটক রয়েছে তার সংখ্যা বলা মুশকিল।

সৈকতের ব্যবসায়ীরা জানান, এই দৃশ্যটি শুধু বিকালের না। সকাল থেকে টানা জনস্রোতে মুখরিত রয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের-এ বিস্তীর্ণ এলাকা।

সৈকতের পাশাপাশি পর্যটন জোন হিসেবে পরিচিত কলাতলীর হোটেল-মোটেল এলাকার সড়ক ছাড়াও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দেখা মিলেছে মানুষের ঢল। সে সাথে রয়েছে সড়কে যানজটের তীব্রতাও।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটের কয়েকদিন আগে বড়দিনসহ টানা তিন দিনের ছুটিতে ধারণা করা হচ্ছে কক্সবাজারে এখন দুই লাখের অধিক পর্যটক ভ্রমণে এসেছেন, যা চলতি বছরের রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকের আগমন।

জেলার হোটেল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটকের সমাগম হতে পারে। বর্তমানে তারকা মানের হোটেল ও রিসোর্টে কক্ষ খালি নেই। ছোট ও মাঝারি হোটেল, গেস্টহাউজ ও কটেজগুলোর বেশির ভাগ কক্ষও ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বুকিং দিয়েছেন পর্যটকেরা। এ জেলায় পাঁচ শতাধিক হোটেল মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার পর্যটকের ধারণক্ষমতা রয়েছে।

হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিক, ট্যুর অপারেটর, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত আট দিনে অন্তত নয় লাখের বেশি পর্যটক সৈকতে বেড়াতে আসবেন। এর আগের পাঁচ দিনে এসেছেন প্রায় চার লাখ পর্যটক। বছরের শেষ ১০ দিনে জেলায় সব মিলিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁ, শুঁটকি, মৎস্য, শামুক-ঝিনুকসহ ১৭টি খাতে প্রায় হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হতে পারে।

কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘শুক্রবার পর্যটকের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ৩১ ডিসেম্বরও এক দিনে দেড় লাখ পর্যটকের সমাগম হতে পারে। সব মিলিয়ে সাত দিনে অন্তত নয় লাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন।’

এ বছর উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন নেই। তবে হোটেল ও রিসোর্টগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আয়োজন করবে বলে জানান আবুল কাশেম সিকদার। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে গত সাত থেকে আট বছর ধরে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন করা হচ্ছে না। এবারও তাই হচ্ছে।

শুক্রবার সৈকতের লাবণি পয়েন্টে দেখা গেছে, প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার পর্যটক। এ ছাড়া কলাতলী সৈকতে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ও সিগাল-লাবণী পয়েন্টে ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার পর্যটক। পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর বড়দিনের ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেকেই এক দিনের বাড়তি ছুটি নিয়ে ঘুরতে এসেছেন।

সৈকতে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, শুক্রবার শহরের পাঁচ কিলোমিটার সৈকতজুড়ে প্রায় দুই লাখ পর্যটকের সমাগম ছিল। তাঁদের নিরাপত্তায় ২৬ জন লাইফগার্ড দায়িত্ব পালন করছেন।

সৈকতে কথা হয়েছে সিলেট থেকে বেড়াতে আসা হাসনাত শরীফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার সব সময় আমার প্রিয় জায়গা, সুযোগ পেলেই চলে আসি। কখনও একা, কখনও বন্ধুদের সঙ্গে, আজকে এসেছি পরিবার নিয়ে। এখানে সমুদ্র, পাহাড় সব মিলেই মন ভালো করার পরিবেশ রয়েছে।’

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হায়দার আলী বলেন, ‘সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি, কিন্তু অতিরিক্ত ভিড়ে হতাশ হতে হয়েছে। এরপরও পরিবার নিয়ে ভালো সময় কেটেছে।’

পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি হয়রানি প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের প্রথম এবং মুখ্য কাজ হচ্ছে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সে লক্ষ্যে নিয়মিত তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটক হয়রানি দমনে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’

কক্সবাজারে পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে সৈকতের কোথাও উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানের অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। সৈকতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ। তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে একাধিক তারকা হোটেল কনসার্টের আয়োজন করছে। সেখানে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

শান্তিপূর্ণভাবে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা ও হোটেল মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছে জেলা প্রশাসন। পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তিপূর্ণভাবে ইংরেজি বর্ষবিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে।

শাহিদুল আলম বলেন, কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়ে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারেন তারজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম মাঠে রয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version