নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় মাসকা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের চক সাদক কোনাপাড়ায় দুর্বৃত্তদের হাতে দরিদ্র কৃষক আব্দুস সালাম (৬৬)- এর চাষ করা সীম ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এতে তিনি আনুমানিক দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আব্দুস সালাম মৃত আবেদ আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা তার ২১ শতাংশ জমিতে লাগানো সীম গাছ কেটে ফেলে। পরের দিন শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি চোখে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। পৈতৃক সূত্রে তেমন জমিজমা পাইনি। এই ২১ শতাংশ জমি বছরে আট হাজার টাকায়ক আরেকজনের কাছ থেকে রমরমা (বন্ধক) নিয়ে সিজনাল সবজি চাষ করে সংসার চালাই। তিন মাস আগে এখানে সীমের বীজ বপন করি। ধার-দেনা করে এখন পর্যন্ত সার ও কীটনাশক বাবদ প্রায় ৭২ হাজার টাকা খরচ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই ফলন আসার কথা ছিল। গতকাল এশার নামাজের সময় এবং আজ ফজরের পরও ক্ষেত দেখে এসেছি- সব ঠিক ছিল। কিন্তু সকাল ৯টার দিকে দেখি গাছগুলো নুয়ে পড়েছে। কে বা কারা এমন ক্ষতি করল, কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন এই ক্ষতি কীভাবে সামলাবো, জানি না।’
প্রতিবেশি আলেহা বেগম বলেন, ‘এমন ক্ষতি করার চেয়ে সালামকে মেরে ফেললেও ভালো হতো। সে তো গরিব মানুষ, এই ক্ষেতই তার বাঁচার ভরসা।’
আব্দুস সালামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম বলেন, ‘অর্থের অভাবে আমার এসএসসি পাস ছেলেকে এইচএসসিতে ভর্তি করাতে পারিনি। আমি আর আমার স্বামী দুজনেই অসুস্থ। প্রতি মাসে ১০-১২ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এই ফসলের টাকায় আমাদের সংসার চলে। এখন এই ক্ষতি কীভাবে সামলাবো বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আগে জানা ছিল না। আমি সরেজমিনে সীম ক্ষেত পরিদর্শনে যাব এবং সম্ভব হলে সরকারি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী মাহবুব বলেন, ‘এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


